মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির নতুন বইয়ের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি থেকে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র দিতে ২০০ টাকা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকেরা।
উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা। তবে টাকা নেয়ার অভিযোগের সত্যতা নেই বলে দাবি প্রধান শিক্ষক শামসুল ইসলাম সিকদারের।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে করেছে। অথচ এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কেউ সে নিয়ম মানছেন না। নতুন বই দেয়ার জন্য প্রতিটি শ্রেণির একেকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছেন শিক্ষকেরা। পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ যেসব শিক্ষার্থী ছাড়পত্র নিতে এসেছে তাদের কাছ থেকেও ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, এ বছর বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ১৩৫, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৩০, তৃতীয় শ্রেণিতে ১১৫, চতুর্থ শ্রেণিতে ১১৫ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে গত দুই দিনে প্রথম শ্রেণির ৭০, দ্বিতীয় শ্রেণির ৮২ এবং তৃতীয় শ্রেণির ১০১ জন শিক্ষার্থী নতুন বই নিয়েছে। তবে শিশু ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী বই পায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘আমরা জানতাম সরকারি কোনো খরচ নাই। তয় কী কারণে ১০০ টেকা হেরা নিব জিগাইছিলাম। স্যারেরা কইল, বই দিব, খরচ আছে। আবার কেউ কইল স্কুলের আয়া খালারে দিব।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘বই এবং ছাড়পত্র দিয়ে কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়া হয়নি। যারা বলেছে তারা ভুল বলেছে। আমরা এ কয়দিন বই আনা-নেয়া নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম।’
এ বিষয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমেন মিয়া বলেন, নতুন বই দেয়া এবং ছাড়পত্র দেয়া বাবদ কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকাও নেয়ার সুযোগ নেই। ওই স্কুলের শিক্ষকেরা এমন কাজ করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।