কুমিল্লার মুরাদনগরে ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশনের (ডিপিএড) প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনে শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুরাদনগরে ১১২ জন শিক্ষকের ডিপিএড প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনের কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষক নেতারা উপজেলা শিক্ষা অফিস ও হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা করে প্রায় ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।
এই অর্থ উত্তোলনের মূল হোতা হিসেবে অভিযোগ উঠেছে বড়ইয়াকুড়ি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা সমিতির কথিত সভাপতি জামাল হোসেন এবং রাজাবাড়ী স্কুলের বরখাস্তকৃত শিক্ষক আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে।
উত্তোলন করা টাকার একটি সামান্য অংশ উপজেলা শিক্ষা ও হিসাবরক্ষণ অফিসে দিয়ে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫ শিক্ষক বলেন, আমরা টাকা উত্তোলন করে সমিতির সভাপতি জামাল হোসেনকে দেওয়ার জন্য আবদুল জলিলকে বুঝিয়ে দিই।
ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তারসহ আরও কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, ডিপিএড স্কেলের বকেয়া ভাতার জন্য সহকারী শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা করে নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষক সমিতির কথিত সভাপতি জামাল হোসেন ও রাজাবাড়ী স্কুলের বরখাস্তকৃত শিক্ষক আবদুল জলিল বিষয়টির সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন এ বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিল তৈরির জন্য তার অফিসের কাউকে টাকা দিতে হয় না। তিনি আরও জানান, শিক্ষক আবদুল জলিল এই বিলের বিষয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছেন এবং বিভিন্ন জনকে দিয়ে তার কাছে তদবিরও করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, তিনি বা তার অফিসের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নন। তিনি এটিকে একটি বড় ধরনের ‘অপরাধ’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস পাল বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না, তবে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। খোঁজখবর নিয়ে দেখব।