আমাকে মেয়র ঘোষণা করায় বিচারককে হুমকি দিয়েছেন এক উপদেষ্টা, অভিযোগ ইশরাকের | বিবিধ নিউজ

আমাকে মেয়র ঘোষণা করায় বিচারককে হুমকি দিয়েছেন এক উপদেষ্টা, অভিযোগ ইশরাকের

নিম্ন আদালত থেকে যখন রায়টি হয় তখনই সরকারের একজন উপদেষ্টা জজ সাহেবকে ফোন করেন। কেন এই রায়টি দেওয়া হলো তা জানতে চেয়ে বিচারককে এক ধরনের হুমকি প্রদান করে।

#বিএনপি #আদালত #বিচারক

২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল বাতিল করে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীকে মেয়র ঘোষণার পর আদালতের বিচারককে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইশরাক হোসেন।

তিনি বলেন, নিম্ন আদালত থেকে যখন রায়টি হয় তখনই সরকারের একজন উপদেষ্টা জজ সাহেবকে ফোন করেন। কেন এই রায়টি দেওয়া হলো তা জানতে চেয়ে বিচারককে এক ধরনের হুমকি প্রদান করে। যেহেতু অফিশিয়াল প্রমাণ নাই এ কারণে এতদিন সবাইকে কিছু বলি নাই। কিন্তু পরবর্তীতে এরকম রিপোর্ট পেয়েছি।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশমুখ কাকরাইল মসজিদ মোড়ে বুধবার (২১ মে) রাতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইশরাক হোসেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে মৎস্য ভবনে অবস্থান করা সমর্থকরা সন্ধ্যার পর চলে গেলেও কাকরাইলের সড়কে রয়ে যান বাকিরা। সন্ধ্যার পর সমর্থকদের সাথে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন এই বিএনপি নেতা। মধ্যরাতেও বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা।

ইশরাক হোসেন বলেন, রায়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর পর তাদের বিজ্ঞ আইনজীবী প্যানেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। তারপর পুরো কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া যেতে পারে। আমরা শুনেছি উপদেষ্টাদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ ফোন করে চাপ প্রয়োগ করেছে ফাইলটি যাতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে যখন গেল তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলো এখানে মতামত দিলে আমার পক্ষেই দিতে হবে; বিপক্ষে দেওয়ার সুযোগ নেই। যার কারণে আইন মন্ত্রণালয় কালক্ষেপণ করলো মতামত দিলো না। তখন নির্বাচন কমিশনের যে দশ দিনের সময়সীমা তার মধ্যে তারা গেজেট প্রকাশ করলো। এরপর নির্বাচন কমিশন, আইন মন্ত্রণালয়সহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আমি যাতে শপথ নিতে না পারি, তাতে তারা হস্তক্ষেপ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা—আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ইশরাক বলেন, এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জনগণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

এই উপদেষ্টা পরিষদ বহাল থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সঠিক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় মন্তব্য করে ইশরাক বলেন, উপদেষ্টা পরিষদকে রদবদল করতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে আদালতের রায় পাওয়ার পর থেকে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ করতে গিয়ে এখানে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ নন।

এখানে বিভিন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন, যারা বিশেষত বিএনপির বিরুদ্ধে কাজ করছেন এবং আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করছেন উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, এ রকম একটি রাজনৈতিক মনোভাবসম্পন্ন অথবা একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সফট কর্নার রয়েছে এ রকম যদি একটি সরকার থাকে, তাদের অধীনে কোনো দিনও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে তারা তাদের দলে গিয়ে রাজনীতি করুক, সংগঠন করুক, তাদেরকে স্বাগতম, কোনো সমস্যা নাই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার।

অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি।

#বিএনপি #আদালত #বিচারক