নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী থানা-ওয়ার্ড কমিটি স্থগিত | বিবিধ নিউজ

নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী থানা-ওয়ার্ড কমিটি স্থগিত

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওই নেতাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

গাজীপুরের টঙ্গীতে ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে শিরিন সরকার নামের এক নারী বাদী হয়ে টঙ্গীর পূর্ব থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনার পর গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টঙ্গী শাখার সদস্যসচিব ও টঙ্গী পূর্ব থানার মধ্য আরিচপুর (পানির পাম্প) এলাকার বাসিন্দা আকাশ খানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন একই এলাকার ইমতিয়াজ শুভ (২২), মোক্তার হোসেন (২০), ইফতেখার শুভ (২১), মো. আসিফ (২০), পিয়াস ঘোষ প্রিন্স।

মামলার বাদী শিরিন সরকার মধ্য আরিচপুর (শেরেবাংলা রোড) এলাকার নায়েব আলী সরকারের মেয়ে এবং স্থানীয় আবুল হোসেনের স্ত্রী। চাঁদাবাজির ঘটনার ১৯ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওই নেতাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২৮ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামিরা অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের নিয়ে তাঁর বাসায় আসেন। তাঁরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা দাবি করেন এবং তাঁর স্বামী আবুল হোসেনের নামে চারটি মামলা আছে বলে জানান। মামলাগুলো সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে তাঁরা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাঁর স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে ভয়ে তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হন এবং বাসায় টাকা না থাকায় পরদিন দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু আসামিরা চাপ সৃষ্টি করেন। পরে ভয়ে তাঁদের নগদ ২৫ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকা বৃহস্পতিবার সকালে পরিশোধ করার কথা বললে ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে বাদীর সই নিয়ে আসামিরা চলে যান।

এজাহারে আরও বলা হয়, ২৯ মে সকালে আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাঁদের না পেয়ে তাঁর ছেলের ফোনে কল করে চাঁদার টাকা চান। টাকা সময়মতো না দিলে বাদীর স্বজনদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো ও রাস্তাঘাটে পেলে হত্যার হুমকি দেন। ওই দিন সন্ধ্যায় এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানার ভেতরে আসামি আকাশ খানের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। তখন আকাশের কাছে টাকা আদায় ও চাঁদা দাবির যৌক্তিক কারণ জানতে চাইলে তাঁদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার একটি লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। পরে ঘটনাটি গভীর রাত পর্যন্ত সমাধানের চেষ্টা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের নেতারা।

এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলার সব থানা ও ওয়ার্ডের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যদি কেউ পদ ব্যবহার করে কোনো অপকর্ম করেন, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি দায়ী থাকবে না এবং সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে।

জানতে চাইলে নাবিল আল ওয়ালিদ বলেন, টঙ্গী এলাকায় পরপর দুটি ঘটনা ঘটায় জেলার সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয় দিয়ে কোনো অপকর্ম করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে টঙ্গীতে শিল্পকারখানায় ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টঙ্গী পশ্চিম এলাকার আহ্বায়ক মো. ইশহাককে (২৬) গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন