দেশের স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোর এমপিওভুক্তির আবেদন শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই), চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের এমপিও শাখার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ৩ জুলাই হতে এ কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও পরে তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
বিভাগের উপসচিব (এমপিও) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও ব্যানবেইসের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত লিংক থেকে অনুদানভুক্ত মাদরাসাগুলো এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
সম্প্রতি ইবতেদায়ি মাদরাসা এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আবেদন করা মাদরাসাগুলোর তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য বিবেচিত মাদরাসাকে এমপিওভুক্ত করা হবে।
www.tmed.gov.bd, www.dme.gov.bd ও www.banbeis.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত লিংকের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
আবেদন সরাসরি, ইমেইল বা পত্রের মাধ্যমে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ অথবা এর অধীন কোনো দপ্তরে গ্রহণ করা হবে না। ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন, পাঠদান, স্বীকৃতি, পরিচালনা ও জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে যোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
এর আগে অনুদানভুক্ত ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো এমপিওভুক্তির জন্য ‘নতুন করে আবেদন লাগবে না’ বলে জানিয়েছিলেন মাদরাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক। তবে নীতিমালা জারির পর মাদরাসাগুলোর এমপিওভুক্তির আবেদন চাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উপসচিব (এমপিও) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আমরা আগে অনুদান দিতে মাদরাসাগুলো থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম তা ছিল ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বা হার্ড কপিতে। ওইসব নথিপত্রের কোনো ডেটাবেজ নেই। তা ছাড়া অনুদানভুক্ত হওয়ার পর মাদরাসাগুলোর সার্বিকভাবে কী অবস্থা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। তাই অনলাইনে আবেদন নিয়ে মাদরাসাগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে।
এর ফলে মাদরাসাগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। আর শিক্ষক-কর্মচারী ও মাদরাসার নথিপত্র ডেটাবেজে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা ৩ হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দেশে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।
শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এ বছরের শুরুতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোকে প্রথমে এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত ২৫ জুন ইবতেদায়ি মাদরাসা এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুসারে মাদরাসাগুলোর মোট ছয়টি পদ এমপিওভুক্ত হবে। ইবতেদায়ি প্রধান বেতন পাবেন ১০ম গ্রেডে। আর সাধারণ, বিজ্ঞান ও আরবি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ১৩তম গ্রেডে। আর ক্বারী বা নূরানী বিষয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১৬তম গ্রেডে বেতন পাবেন। আর প্রতিটি ইবতেদায়ি মাদরাসার অফিস সহায়ক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, যে পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০ তম গ্রেডে বেতন পাবেন।
নীতিমালা অনুসারে, মাদরাসাগুলোর শিক্ষক পদে এনটিআরসিএর সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। নীতিমালায় মাদরাসাগুলোর ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নির্দেশনা এসেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক পদে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।