দক্ষিণ আফ্রিকায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল শিক্ষার্থীদের বহনকারী স্কুলবাস | বিবিধ নিউজ

দক্ষিণ আফ্রিকায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল শিক্ষার্থীদের বহনকারী স্কুলবাস

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারী বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের ফলে সৃষ্ট আবহাওয়ার প্রভাবে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।

#স্কুল #শিক্ষার্থী #বন্যা

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারী বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের ফলে সৃষ্ট আবহাওয়ার প্রভাবে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে দেশটির ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে একটি স্কুলবাস ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার। অবশ্য বাসটিতে কতজন শিশু ছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত তিনজন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ইস্টার্ন কেপ প্রদেশ সরকারের মুখপাত্র খুসেলও রানতজিয়ে জানান, রাত নেমে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকালে আবার তল্লাশি শুরু হবে।

এ দিকে ইস্টার্ন কেপের ওআর টাম্বো জেলায় আরেকটি ঘটনায় বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ ঝড় ও বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান দুর্যোগে দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপকূলবর্তী ইস্টার্ন কেপ ও কওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইস্টার্ন কেপ হলো বর্ণবৈষম্যবিরোধী কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মস্থান।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রাণহানি এড়াতে দুটি প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইস্টার্ন কেপের প্রিমিয়ার অস্কার মাবুইয়ানে এক বিবৃতিতে বলেন, এটি প্রকৃতির ধ্বংসাত্মক শক্তির একটি করুণ উদাহরণ। আমরা জনগণকে বন্যাপ্রবণ এলাকায় অতিরিক্ত সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।

তিনি জানান, ইস্ট লন্ডন উপকূলীয় শহরের কাছে একটি মিনিবাস উল্টে গিয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। চালক জানিয়েছেন, একটি গাছ উপড়ে সড়কে পড়েছিল, সেটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারান। এই দুর্ঘটনায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি এসকম জানায়, ইস্টার্ন কেপের ১৪টি শহর ও গ্রামের প্রায় ৩ লাখ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কওয়াজুলু-নাটালের ২৪টি এলাকায় আরও প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

কওয়াজুলু-নাটালের পরিবহনমন্ত্রী সিবোনিসো ডুমা জানান, প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে সড়কে ট্রাকগুলো আটকে পড়েছে এবং ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও জানান, কিছু সড়কে তুষার ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত জমে গেছে। সেসব সড়ক পরিষ্কারে গ্রেডার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ লেলোহোনোলো থোবেলা সতর্ক করেছেন, উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া এবং বিশাল ঢেউয়ের কারণে সমুদ্রে জাহাজ চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকায় জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত শীতকাল থাকে, এ সময় তাপমাত্রা প্রায়ই হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়। এই সময়টায় বরাবরই তুষারপাত ও বন্যা হয়ে থাকে, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন বৃষ্টিপাত আরও তীব্র ও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল থেকে ২ মের মধ্যে আকস্মিক বন্যা ও নদীর পানি উপচে পড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৫০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অন্তত ১৮ জন আহত হন।

#স্কুল #শিক্ষার্থী #বন্যা