ছবি : দৈনিক শিক্ষাডটকম
বেসরকারি মেডিক্যালে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান গেট অবরোধ করে রেখেছেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি আসন ফাঁকা রয়েছে তাই দ্বিতীয় দফার ভর্তি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান গেটে দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও এখনো প্রায় ৬০০টি আসন ফাঁকা রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) ডা. রুবীনা ইয়াসমিন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অথচ এ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার কোনো ভর্তি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। আসন ফাঁকা থাকাকালীন এই নীরবতা এক গভীর প্রশ্নের জন্ম দেয়-এটা কাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য?
সরকার চিকিৎসা শিক্ষার আসন সংখ্যা নির্ধারণ করেছে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রয়োজন বিবেচনা করে। সেক্ষেত্রে অনুমোদিত আসন পূর্ণ না হলে চিকিৎসা ব্যবস্থার ভবিষ্যত পরিকল্পনাই প্রশ্নের মুখে পড়ে। এটা শুধু একাডেমিক নয়, জাতীয় স্বার্থে আঘাত।
অন্যদিকে, এই ৬০০ ফাঁকা আসনের বিপরীতে রয়েছে হাজারো ছাত্রছাত্রীর অব্যক্ত কান্না, অনিশ্চয়তা আর স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা। অনেকে অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে প্রথম দফায় ভর্তি হতে পারেনি-কেউ আবেদন করতে গিয়ে ভুল করেছে, কেউ নিশ্চায়ন করতে ভুল করেছে, কেউ হয়তো অর্থসংকটে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি ফি জমা দিতে পারেনি।
এমন অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী আছে, যাদের মেধাতালিকায় অবস্থান ছিল উচ্চে, তারাও এখনো অপেক্ষায়। কিন্তু সেই গল্পগুলো আজ স্তব্ধ হয়ে আছে এক নিষ্ঠুর ব্যবস্থার সামনে, যেটি শুধু বলে- পোর্টাল বন্ধ।
প্রতিবার ডিজিএমইতে যোগাযোগ করলে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেই। অথচ আমরা জানি, প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রিত এই পোর্টাল কোনো অলঙ্ঘনীয় সীমানা নয়।
এটা খুলে দেওয়া এক ক্লিকের ব্যাপার মাত্র যদি সদিচ্ছা থাকে। তাহলে প্রশ্ন আসে-এই পোর্টাল কি এতটাই শক্তিশালী যে, সেটি শত শত তরুণ-তরুণীর ভবিষ্যতের চেয়ে বড় হয়ে যায় প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।
তারা বলেন, বিষয়টি শুধু শিক্ষার্থী বা পরিবারের না, এটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার ওপর সরাসরি আঘাত। সরকার তো দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের জন্য প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মেডিক্যাল সিট নির্ধারণ করে। সেই হিসাব-নিকাশের ভেতরেই এসব আসন রয়েছে। তাহলে এগুলো পূর্ণ না হলে ক্ষতি কার? ক্ষতি রাষ্ট্রের, ক্ষতি সমাজের, ক্ষতি আমাদের সবার।
আরও বলেন, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসের ছাত্র অভ্যুত্থান কোনো সাধারণ রাজনৈতিক পরিবর্তন ছিল না। এটা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেশের তরুণ প্রজন্মের আপসহীন অবস্থান। তাদের বুকের রক্ত, চোখের জল, নিঃশব্দ রাতের চিৎকার-এসবের বিনিময়ে এই দেশ এক নতুন পথে যাত্রা শুরু করে।
তখন সবাই বলেছিল-এইবার সত্যের জয় হবে, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হবে। তবে আজ যখন শত শত শিক্ষার্থী এক ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তখন প্রশ্ন উঠতে বাধ্য-এই সরকার কি সেই শিক্ষার্থীদের কথা ভুলে গেছে, যাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিল?
হাজারো স্বপ্ন, শত শত সম্ভাবনা আজ থেমে আছে শুধুমাত্র একটি পোর্টাল খোলা হয়নি বলে এটা কি নতুন বাংলাদেশের চিত্র?
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।