নওগাঁর রাণীনগরে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মকলেছুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে ডিগ্রি পাসের ভুয়া সনদ দিয়ে ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার সনদটি যাচাইয়ে ভুয়া বলে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিদ্যালয়ের অ্যাডহক (ম্যানেজিং) কমিটির সভাপতি পদের লোভে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মকলেছুর রহমান বাবু। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাসের (বিএসএস) প্রোগ্রামের ভুয়া সনদ তৈরি করে দাখিল করেছেন বিদ্যালয়ে। ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মকলেছুর রহমান বাবুর ভুয়া সনদ কাণ্ড নিয়ে সর্বমহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
অভিযুক্ত মখলেছুর রহমান বাবু উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
ডিগ্রি পাসের সনদ সম্পর্কে জানতে চাইলে মকলেছুর রহমান বাবু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে কোনো সনদ জমা দেইনি। তিনি কোথায় সনদ পেয়েছেন তা আমি জানিনা। এই বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন। আর আমার সনদ ঠিক আছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মোত্তালিব দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার কাছে চেয়ারম্যান তার প্রতিনিধির মাধ্যমে উন্মুক্তের ডিগ্রি পাসের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছিলেন। তিনজন সভাপতি প্রার্থীর নাম ও কাগজপত্র সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছি। তার সনদ সঠিক না ভুয়া তা আমি জানিনা।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তার সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দেয়।
জানা গেছে, উপজেলার ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের (ম্যানেজিং) অ্যাডহক কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে নিদের্শনা দেয়া হয়। এরপর প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের বিষয়টি অবহিত করলে তারা আলোচনা সাপেক্ষে সভাপতি পদে তিন জনের নাম প্রস্তাব করেন। যথাযথ নিয়মে বিদ্যালয়টির অ্যাডহক কমিটি গঠনের জন্য তিনজন সভাপতি প্রার্থীর কাছ থেকে ডিগ্রি (স্মাতক) পাসের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাজগপত্র সংগ্রহ করে সভাপতি পদে তিনজনের নাম জানুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান প্রতিষ্ঠান প্রধান।
নাম পাঠানো তিনজন সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থী চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবু বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাসের (বিএসএস) প্রোগ্রামের সনদ জমা দেন। এরপর অন্য প্রার্থীর মধ্যে বাবুর ডিগ্রি পাসের সনদ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। একপর্যায়ে ওপর দুই সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থী তার সনদের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তার জমা করা সনদটি যাচাইয়ের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবুর দাখিল করা সনদটি ভুয়া।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) যুগ্ম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইঞ্জিনিয়ার এসএম কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত সনদ যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়, মকলেছুর রহমান এর বিএসএস প্রোগ্রামের আইডি নং ০১-০-২৩-৩৬০-০৪৯ এর মূল সনদের ফটোকপি যাচাই পূর্বক ভুয়া চিহ্নিত করে সনদের ফটোকপি সংযুক্ত সিলগালা করা খামে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর পাঠান এবং প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।