সম্রাট শাহজাহান মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা নন। এ কথা প্রায় সবার জানা। কিন্তু ভারতের আগ্রার তাজমহলের জন্য মোগল সম্রাট শাহজাহানের নামটি বারবার আলোচনায়। তাজমহল দেখে সারা দুনিয়ার বিখ্যাত মানুষেরা সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করেন ও করবেন। তাজমহলের ঘটনার সঙ্গে আজকের এই লেখার কোনো মিল নেই। তবু কেন প্রসঙ্গ আসলো তা বুঝতে পুরো লেখাটা পড়তে হবে। আশাকরি, পাঠক পুরোটা পড়বেন। এটা একটা রম্য রচনা। বাস্তবের কোনো চরিত্রের সঙ্গে এই লেখার চরিত্রের কোনো মিল নেই। আর এই লেখাটি শুধু শিক্ষাখাত সংশ্লিষ্টদের--বিশেষ করে যারা শিক্ষা প্রশাসনের আদ্যোপান্ত জানেন ও মনে রাখেন।
ঘটনা-১
ঈদুল ফিতরের আগে প্রিয়তমা হাউজওয়াইফ স্ত্রীকে ৮০ লাখ টাকা দামের গয়না কিনে দিয়ে পুরো শিক্ষক সমাজে বাহবা কুড়িয়েছেন সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক। এই শিক্ষক একজন পুত্রা।
ঘটনা-২
এই শিক্ষকের কয়েক মাইল দুরের তাউই প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী। পুত্রা আবদুল গণি রোডের এক ছয়তলা ভবনের তিন তলায় আর তাউই ২০তলা ভবনের ১৮ তলায়। গত ১০ মাসে শিক্ষাখাতে সবচাইতে সমালোচিত তাউই’র ভাবসাবের সঙ্গে নানা মামলা মোকদ্দমায় কারাবন্দি সাবেক শিক্ষা ও মূখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছেন শিক্ষা বিশ্লেষকরা। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসেন কামাল চৌধুরী।
আরো মিল রয়েছে সাবেক আমলা ও মন্ত্রী এবং নানা মামলায় কারাবন্দি র উ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর। লুটেরা পরিবার হিসেবে চিহ্নিত মোকতাদির। কামাল চৌধুরীও শিক্ষাসচিব থাকাকালে নিজের অখাদ্য কবিতা পাঠ্যবই ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কবিতা ঢোকানোর ঘটনার খবরটি প্রথম ছাপা হয় দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ। তা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়। দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনের সুত্র ধরে কামাল চৌধুরীকে তলব করা হয় সংসদীয় কমিটিতে। প্রতিশোধপরায়ন কামাল চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি শিক্ষা ছেড়ে জন প্রশাসন সচিব হয়ে যান। এরপর আওয়ামী ঘরানার কয়েকজন নামধারী সাংবাদিককে লেলিয়ে দেওয়া হয় দৈনিক শিক্ষার বিরুদ্ধে। টাউট অভিভাবক এবং বাটপার শিক্ষা ক্যাডারেরও দুএকজনকে উসকে দেন মোকতাদির চৌধুরী ও কামাল চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব থাকাকালে কামাল চৌধুরী নানা মামলা মোকদ্দমায় জড়ানোর চেষ্টা করেন দৈনিক শিক্ষা পরিবারের সদস্যদের। আজকের লেখার তাউই সাহেবও ইতিমধ্যে দৈনিক শিক্ষার বিরুদ্ধে খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নানা অপপ্রচার করেছেন মর্মে খবর পাওয়া গেছে। লেলিয়ে দিয়েছেন শতাধিক সরকারি কলেজের শিক্ষক। যাদের কাজ ফেসুবকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দৈনিক শিক্ষার নিন্দেমন্দ করা। যেমনটা মোকতাদির চৌধুরী ও তার স্ত্রী অবৈধভাবে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি নেওয়া ও ডিজি পদে থাকা ফাহিমা খাতুন এবং যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক নাহিদের এপিএস মন্মথ বাড়ৈ গংরা করতেন।ঘটনা-৩
সমালোচিত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী তাউই শিক্ষক পুত্রার পক্ষ নিয়েছেন। এতে হতাশ হয়েছেন মুকুটসহ শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় ১৬ হাজার কর্মকর্তা।
ঘটনা-৪
আলোচিত সরকারি কলেজের শিক্ষক পুত্রাটি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি আবুল গণি রোডের একটি ভবনের তিনতলায় বসেন। কাউকে পাত্তা দেন না। গত সেপ্টেম্বর মাসে নতুন পদে বসেই তার পুরনো বস ও দোস্ত শাহেদুল খবির চৌধুরীর অসমাপ্ত নিয়োগ সম্পন্ন করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শক পদ প্রার্থীরা তাদের লিখিত বক্তব্যে তার নামটিই তুলে ধরে বলেছেন, ‘...স্যার ফল প্রকাশের পক্ষে।’
পুনশ্চ: চট্টগ্রামের ডিসি হিসেবে পদায়ন পাওয়ার আগে তৎকালীন জন প্রশাসন সচিব কামাল নাসের চৌধুরীর প্রিয়তমা স্ত্রীকে ২৫ লাখ টাকা দামের গয়না দিয়েছিলেন মেজবাহ। চট্টগ্রামের ডিসি থাকাকালে অনেক কেলেঙ্কারির নায়ক হয়েছিলেন মেজবাহ। গয়না কেনার জুয়েলার্সের মানি রিসিটের কপিও দৈনিক শিক্ষাডটকমসহ অনেকের হাতে রয়েছে। এ নিয়ে কয়েকবছর আগেও দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।