এনটিআরসিএ ‘চালানো’ দীনা পারভীনকে গ্রেফতার দাবি | শিক্ষক নিবন্ধন নিউজ

এনটিআরসিএ ‘চালানো’ দীনা পারভীনকে গ্রেফতার দাবি

রহিমা খাতুন নামের একজন প্রার্থী বলেন, দীনা পারভীনই প্রশ্নকর্তা, মডারেটর ও খাতা দেখার লোক ঠিক করেছেন। তার পছন্দের একই ব্যক্তিকে চারুকলার প্রশ্ন করা, মডারেটর ও খাতা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। দীনা পারভীনকে গ্রেফতারের দাবি জানাই। চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই।

#এনটিআরসিএ #স্কুল #শিক্ষক

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের এক কর্মস্থলে একটানা তিন বছরের বেশি থাকার বিধান নেই। কিন্তু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে এই নিয়ম অচল। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদান যেন ভুলেই গেছেন। টানা সতেরো বছর ধরে তিনি এনটিআরসিএতে। এর মধ্যে একবার প্রমোশনও পেয়েছেন দীনা পারভীন নামের এই কর্মকর্তা। তিনিই এনটিআরসিএতে তিনি সবচাইতে দাপুটে কর্মকর্তা। তিনি নিজেকে পরিবহন শ্রমিক নেতা ও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী শাহজাহান খানের ভাগ্নি দাবি করতেন। শাহজাহান খান নানা অভিযোগের মামলায় কারাবন্দী।

এদিকে ত্রিশ শতাংশ উত্তীর্ণ হতে পারেননি ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত পরীক্ষায়। ফল প্রকাশ হয়েছে ৪ জুন। এরপরই প্রার্থীরা দাবি করে আসছেন দীনা পারভীনের পরামর্শেই সবকিছু হয়েছে ও হচ্ছে। সংক্ষুব্ধরা দাবি করছেন, আমলাতান্ত্রিক চাতুর্যতায় ঠাসা এবারের ফল প্রকাশ ও পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কৌশল। টানা ছুটিতে গেছেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান প্রশাসন ক্যাডারের অতিরিক্ত সচিব মফিজুর রহমান।

হাবিবুর রহমান নামের একজন প্রার্থী দাবি করেছেন, ১৮তমর ভাইভায় চেয়ারম্যানের বোর্ডের প্রায় সবাইকে ফেল করানো হয়েছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে কখনো ভাইভা হয়নি। দীর্ঘ সময় নেওয়ার কারণে অনেক প্রার্থী অযোগ্য হয়ে পড়েছেন বয়সের বাধায়। তৎকালী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ নির্দেশ দিয়েছিলেন ভাইভা বোর্ড বেশি করে গঠন করে তাড়াতাড়ি পরীক্ষা নেওয়ার কিন্তু দীনা পারভীন ও চেয়ারম্যান সেই পরামর্শ শোনেননি। কয়েকজন প্রার্থীকে ডেকে নিয়ে আমলাতান্ত্রিক শান্তনা ও চা পান করিয়েছেন। আর এই জালে আটকা পড়েছেন কতিপয় প্রার্থী। ফল প্রকাশের পর দেখতে পান তাদের অধিকাংশই ফেল।

রহিমা খাতুন নামের একজন প্রার্থী বলেন, দীনা পারভীনই প্রশ্নকর্তা, মডারেটর ও খাতা দেখার লোক ঠিক করেছেন। তার পছন্দের একই ব্যক্তিকে চারুকলার প্রশ্ন করা, মডারেটর ও খাতা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন। দীনা পারভীনকে গ্রেফতারের দাবি জানাই। চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভাগ্নিকে পদায়ন ও বদলি ঠেকাতে একাধিকবার ডিও লেটার দিয়েছেন শাহজাহান খান। এসব কারণে ১৭ বছরের সব শীর্ষ কর্মকর্তাই এই ভাগ্নির সঙ্গে খাতির রাখতেন। আলোচিত ভাগ্নিই কর্তাদের চিনিয়ে ও দেখিয়ে দিতেন এনটিআরসিএর টাকা কামানোর মেশিন ও তার যন্ত্রপাতি। সেই ভাগ্নি ১৭ বছর ধরে এনটিআরসিএতে আছেন। যখনই তার বিরুদ্ধে জাল সনদের অভিযোগ ওঠে তখনই তাকে বাঁচাতে মরিয়া হয়েছেন চেয়ারম্যানরসহ অনেকেই।

সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিলো ভাগ্নি এনটিআরসিএতে কত বছর ধরে আছেন? উত্তরটাও লিখে দিয়েছেন ভাগ্নিই! ইনিয়ে বিনিয়ে পদোন্নতি তারপর এত বছর ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাগ্নির তৈরি করা উত্তর পাঠানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে!

কীভাবে এতবছর এনটিআরসিএতে আছেন? এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি দীনা পারভীন। চেয়ারম্যানও কথা বলতে রাজী নন। মন্ত্র্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান চাচ্ছেন দীনা পারভীন থাকুক।

#এনটিআরসিএ #স্কুল #শিক্ষক