ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ সত্ত্বেও গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
গত ২ সেপ্টেম্বরে “দলীয় ছাত্র রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই” এই শিরোনামে কলেজের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে সরাসরি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৯৯.১০ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের পক্ষে ভোট দেয়। ১২ ও ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্যাম্পাস ও হলসমূহে সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদলের একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। উক্ত কমিটিতে সভাপতি পদে মনোনীত হন ডা. রাকিবুল আলম রাফি, যিনি বর্তমানে কলেজের ছাত্র নন এবং ইতোমধ্যে ইন্টার্নশিপ শেষ করেছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ইসলাম উদ্দীন খান।
জানা যায়, ছাত্রদলের ব্যানারে পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিতভাবে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী নয় এমন বহিরাগতরা অংশ নিচ্ছে। সম্প্রতি গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদল আয়োজিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী ১২ জনের মধ্যে ১১ জনই ছিলেন বহিরাগত, যার নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রদল নেতা ইসলাম উদ্দীন খান।
ছাত্রদলের কমিটির বিষয়ে গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অমল চন্দ্র পালকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের শৃঙ্খলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানান, ’আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি আর ফিরুক এটা আমরা চাই না। সেজন্য আমরা বারবার স্যারদের কাছে যাচ্ছি। স্যাররা এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। সেক্ষেত্রে আমরা একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘কলেজ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পরে বহিরাগতদের নিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কোনো ভাবেই কাম্য না। কেউ যদি রাজনীতি করতে চাই তাহলে সে ব্যক্তিগতভাবে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে করুক তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদল সভাপতি ডা: রাকিবুল আলম রাফি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কার্যক্রম আমরা করছি না। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও ক্যাম্পাসে কমিটি থাকাটা স্বাভাবিক। বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে আমরা প্রোগ্রাম করেছি, তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে আমরা বহিরাগতদের নিয়ে প্রোগ্রাম করা থেকে সরে এসেছি।’