চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফাইন্যান্স বিভাগের এক ছাত্র পরীক্ষার ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) খাতা পুনঃনিরীক্ষণের বিষয়ে প্রশাসন থেকে কোনো আশ্বাস না পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ৫ম তলার রেলিং থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এক কর্মচারী তাৎক্ষণিক তাকে টেনে নামিয়ে আনেন।
জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এমবিএ কোর্সে অধ্যয়নরত। ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ১২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র তিনিই একটি কোর্সে অকৃতকার্য হন। তবে তিনি দাবি করেন, ফেল করার মতো উত্তর দেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ছাত্র বলেন, আমি কখনো কোনো কোর্সে ফেল করিনি। থিওরির একটি কোর্সে ফেল করবো এটা মানা যায় না। খাতাটি অন্য কোনো শিক্ষক দিয়ে দেখলেই প্রমাণ হবে আমি ফেল করার মতো উত্তর দেইনি। আমার শুধু এক নম্বর দরকার ছিল, সেটিও দিচ্ছে না। অথচ সেই কোর্সে মাত্র ৬টি ক্লাস নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সঙ্গে পরীক্ষা দিলেও আমি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অনার্স শেষ করতেই আট বছর কেটে গেছে। আমি আর নিতে পারছি না। সরকার বা প্রশাসন কখনোই শিক্ষার্থীদের কষ্ট বোঝে না। এ বিশ্ববিদ্যালয়েও কেউ আত্মহত্যা না করলে রেগুলেশন পরিবর্তন হবে না।
সংশ্লিষ্ট কোর্সে ফেল করার খবর পেয়ে তিনি বিভাগের সভাপতি, পরীক্ষা কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য অনুরোধ করেন। পরে প্রশাসনিক ভবনেও গিয়ে চেষ্টা করেও কোনো আশ্বাস পাননি বলে জানান।
এ বিষয়ে কোর্স শিক্ষক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, আমরা কষ্ট করে পড়াই শিক্ষার্থীরা ভালো করার জন্য। তবুও একজন শিক্ষার্থী যদি ফেল করে তাকে পাশ করিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টি তো আমাদের হাতে নেই। আমরা ২০ নম্বর ইন্টারনাল ইভ্যালুয়েশনে দিয়েছি, সেখানে সে ভালোই করেছে। আর আমরা পরীক্ষার খাতা কোডিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করি, যেখানে দুইজন শিক্ষক যুক্ত থাকেন।
তিনি আরও বলেন, ৬টি ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি একদম সত্য নয়। আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলাম। তবুও আমি অনেকগুলো ক্লাস নিয়েছি তাদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্য দিয়ে কতটুকু কী করা যায়, আন্তরিকতার সঙ্গে তা দেখার চেষ্টা করব।