এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শাহবাগে মিছিল | পরীক্ষা নিউজ

এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শাহবাগে মিছিল

পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মানবন্ধন ও মিছিল করেছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী। আজ বেলা বারোটার কিছু সময় পরে তারা মানববন্ধন করেন। তবে, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছিলো না।

আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এ নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। 

পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।

 সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৩ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অন্যদিকে একই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪৭০: মারা গেছেন ২৮ জন। গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৬ জুন সারাদেশের ১ হাজার ৩১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছেন। পরীক্ষা হবে ২ হাজার ৭৯৭ কেন্দ্রে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগষ্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

 গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তরুণ। তাদের শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই হবে। হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও মাস্ক পরলেই চলবে।

 ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন, করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও তারা নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু করবেন। উচ্চ মাধ্যমিকে বিষয় বেশি থাকায় পরীক্ষা নিতে সময় লাগে। নির্ধারিত সূচির বাইরে গিয়ে পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত কোনো বিকল্প হাতে নেই। এ জন্য পরীক্ষা শুরু করার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একাধিক বিকল্পও রাখা হচ্ছে।

 ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার আমাদের বার্তাকে বলেন, ডেঙ্গু এবং করোনা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি, এটা সত্য। অভিভাবকরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নানা শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন। তবে আমাদের হাতে পরীক্ষা শুরু করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, একদিকে করোনা আক্রান্তের বর্তমানে যে হার তাতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহনে বাধার কোনো পারিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। পরীক্ষার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। পরীক্ষা কক্ষে আসন বণ্টন করা হবে নির্দিস্ট দূরত্ব বজায় রেখে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকল স্কুল ও কলেজগুলো খোলার সাথে সাথে পরিছন্নতা অভিযান চালাতে নির্দেশনা দেয়া হবে। কোনোমতেই ডেঙ্গুর বিস্তার হতে দেয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, আগামী ১৮ জুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সভা হবে। ওই সভাতে করোনা রোধে স্বাস্থ্য বিধি মানার বিষয়টি অবহিত করা হবে। তাছাড়া রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন ওয়েব সাইটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিধির নির্দেশনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিছন্নতা অভিযান প্রচার করা হবে।

তবে অভিভাবকরা কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে দ্রুত পরীক্ষা শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, সন্তানরা পরীক্ষার পুরো সিলেবাস শেষ করেছে। পরীক্ষার পাঠও রপ্ত। অটোপাস না দিয়ে দ্রুত পরীক্ষাগুলো নিলেই হবে।

রাজধানীর হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্রীর অভিভাবক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হলিক্রস, ভিকারুননিসা ও নটর ডেমের মতো বড় বড় কলেজে পরীক্ষার কোনো কেন্দ্র নেই। সরকার চাইলে এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন করে কেন্দ্র দিয়ে দ্রুত পরীক্ষা নিতে পারে।

 তবে পরীক্ষা নিয়ে অনেক শিক্ষক উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নিজের কলেজে কেন্দ্র থাকায় ডিউটি পড়েছে, করতেও হবে। ডেঙ্গু ও করোনা বেড়ে যাওয়ায় নিজের ও পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ পরীক্ষা তিন ঘণ্টার হলেও শিক্ষক-পরীক্ষার্থীদের অনেক আগে কেন্দ্রে আসতে হয়। ভিড়ের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা কঠিন।

 বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী আমাদের বার্তাকে বলেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণের যে হার, তাতে পরীক্ষা শুরু না করার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। পরীক্ষার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা হবে।

 তিনি বলেন, আগামী ১৮ জুন কেন্দ্র সচিবদের সভা হবে। সেখানে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয় অবহিত করা হবে। তাছাড়া ১৫ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধির সরকারি নির্দেশনা প্রচার করা হবে।

 ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতি তারা শেষ করেছেন। এখনও সময় আছে। আজ রোববার অফিস খোলার পর আন্তঃবোর্ড বৈঠক হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।