ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে সবে স্কুল খুলেছে। কিন্তু, গরমের দাপট এখনও সেভাবে না কমায় স্কুলের শিক্ষকসহ অভিভাবকরা বেশ চিন্তিত। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে শিক্ষকরা নিয়ম করে পানি পানের নির্দেশ দিচ্ছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সকালে স্কুল চালুর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করছে।
ইতোমধ্যে এ নিয়ে সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক সংশ্লিষ্ট বোর্ডে চিঠিও পাঠিয়েছেন। দ্রুত অনুমতি পেতে বোর্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখছেন। চেয়ারম্যান বলেন, এখনও গরমের দাপট সেভাবে কমেনি। শিক্ষার্থীদের শরীরের কথা মাথায় রেখে বোর্ডের কাছে মর্নিং স্কুল চালু করার লিখিত প্রস্তাব রেখেছি। অনুমতি মিললেই জেলাজুড়ে মর্নিং স্কুল চালু করা হবে।
বীরভূম জেলায় প্রায় ২৪০১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রায় প্রতিটি স্কুলেই ফ্যানের বন্দোবস্ত রয়েছে। যদিও শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী থাকায় শিক্ষার্থীদের অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ তারিখ পর্যন্ত তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকলেও ধীরে ধীরে তা বাড়তে শুরু করেছে। ৮ তারিখ থেকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কিছু হলেও বেশি হয়েছে।
আগামী দিন কয়েক আবহাওয়া এমনই থাকবে বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা খুদে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে উঠেছেন। একাধিক স্কুলে মিড ডে মিলের পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। খোলা মাঠে খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে নিয়ম করে প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর শিক্ষার্থীদের পানি পানের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
যদিও শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই গরমের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দিতে একমাত্র পথ হল মর্নিং স্কুল।
প্রসঙ্গত, গ্রীষ্মের ছুটির আগে গরমের দাপট ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দিন কয়েক সকালে ক্লাস হয়েছিল। আড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরিন্দম বোস বলেন, এই গরমে ক্লাস রুমে বসে পড়াশোনা করা বাচ্চাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর। এ নিয়ে আমি একাধিক সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছি। মর্নিং স্কুল চালু করার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছি। অন্তত গরম না কমা পর্যন্ত মর্নিং স্কুল করতে পারলে ভালো হয়। তবে, আমরা শিক্ষার্থীদের পানি পানের উপর জোর দিচ্ছি।
রেডক্রস প্রাথমিক বিদ্যালের শিক্ষক সুদীপ মাহাত বলেন, এই গরমে শিক্ষার্থীদরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে মর্নিং স্কুল চালুর সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক। আমাদের আশা, বোর্ডের তরফে দ্রুত অনুমোদন মিলবে। শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও চাইছেন গরমের দাপট না কমা পর্যন্ত মর্নিং স্কুল হোক। যদিও তা নির্ভর করছে বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপর।