বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাটের দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুরু হয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) দুইজন কর্মকর্তা গত ১৮ জুন প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনের কাজ শুরু করেছেন।
আগামী ২৯ জুন পর্যন্ত এই পরিদর্শন চলবে। এসময় পরিদর্শকরা বেসরকারি স্কুল ও কলেজগুলোর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা জুলাই থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ের আর্থিকসহ বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই করবেন।
পরিদর্শনের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার মূল অথবা সাময়িক সনদ, সরকারি বেতন ভাতাদির ব্যাংক বিবরণী দেখাতে হবে। এছাড়াও স্তরভিত্তিক প্রথম এমপিওর সরকারি আদেশ; এমপিও কপি ও তথ্যের মূল কাগজ এবং বিগত পরিদর্শনের পর থেকে নিয়োগ পাওয়া সব শিক্ষকসহ কর্মচারীকে মূল রেকর্ড প্রদর্শন করতে হবে।
এসব পরিদর্শনের দায়িত্বে রয়েছেন ডিআইএর দুই সদস্য শিক্ষা পরিদর্শক মাহমুদুর হাসান এবং অডিট অফিসার মো: সিরাজুল ইসলাম।
তারা দুজন মোল্লাহটের যে দশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবেন তার মধ্যে রয়েছে- খলিলুর রহমান কলেজ, লায়লা আজাদ কলেজ, গিরিশ নগর গারকা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চাউলটুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভান্ডারখোলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, চাঁদেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কামারগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডা: মনসুর আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরকুলিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসা ও কাহালপুর আলিম মাদরাসা।
শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর নিয়মিত কাজের অংশ। বছরব্যাপী ডিআইএ কর্মকর্তারা সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন এবং তাদের কার্যক্রম মূল্যায়ন করেন।
তবে এই দশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবার মাঝে ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ আতঙ্ক বিরাজ করছে। নাম না প্রকাশের শর্তে একাধিক এমপিও শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে একবার এই অধিদপ্তর থেকে অডিটে এসেছিলেন সরকারি কলেজের দুইজন শিক্ষক। তারা খুব জুনিয়র। কিন্তু আমাদের কাছে পরিচয় দিয়েছেন তারা ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’।
পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা মূলত সরকারি কলেজের প্রভাষক ও সহকারি অধ্যাপক। কিন্তু মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে অফিসার তকমা লাগিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পকেট কাটার কাজে ন্যাস্ত। অডিট করতে এসে খুব খারাপভাবে কথা বলেন এমপিওশিক্ষকদের সঙ্গে।
‘সেবার আমাদের এলাকার দশ প্রতিষ্ঠানের সবার তিন এমপিওর টাকা ‘মিনিস্ট্রি অডিটরদের’ দিতে হয়েছে। পুরো টাকাটা নিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মাধ্যমে। ঢাকায় মোট সাত দফায় টাকা পৌঁছে দিতে হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
কিছুদিনের মধ্যেই এই শিক্ষক অবসরে যাবেন। তাই ‘মিনিস্ট্রি অডিটরদের’ বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ দিতে নারাজ ভুক্তভোগীরা। কারণ, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে একবার অভিযোগ দিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়তে শুরু করেছিলেন। অভিযোগ তদন্তে এখানে এসেছিলেন অভিযুক্তদেরই সহকর্মীরা।