চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তবে তার দাবি, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উন্নয়নের স্লিপ, শান্তি বিনোদন, ডেপুটেশন, মাতৃত্বকালীন ছুটি পাস, নতুন শিক্ষক নিয়োগে অর্থ বাণিজ্য তার নিত্যদিনের ঘটনা। আবার কেউ টাকা দিতে না পারলে বাসার বাজার করে দিতে বলেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শিক্ষক বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষকে টাকা না দিলে ছুটি পাওয়া যায় না। এজন্য তিনি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। যা সত্যিই দুঃখজনক।
শিবগঞ্জ উপজেলার বাবুপুর বেলায়েত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, তার শিক্ষক জীবনের দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে তিনি শিক্ষকতা করেছেন। কয়েকদিন পরই যাবেন অবসরে। গেলো ৫ আগস্টের আগে আমার ৭ বছরের নাতি ভুলক্রমে আমার মোবাইল ফোন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একটি ছবি পাঠিয়ে দেন শিক্ষকদের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে। সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনশট নিয়ে রেখে দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষ। এরপর ছবিটি মুছে ফেলা হলেও রক্ষা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন না শর্তে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ১০ হাজার টাকা নিলেও দেওয়া হয় শোকজ নোটিশ।
উপজেলার চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকিরুল ওহিদ বলেন, ২০২৩ সালে নিয়োগ পেয়েছি। আমার সঙ্গে মোট ১৩৫ জন নিয়োগ পেয়েছিলেন। সেসময় সার্ভিস বুক খোলার নাম করে সবার কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে নিয়েছেন। সেসময় থেকেই দেখছি উপজেলা শিক্ষা অফিসে গেলেই টাকা লাগে। অফিসের যেকোনো কাজ টাকা ছাড়া হয় না। উপজেলার সব শিক্ষক এই কর্মকতার কাছে জিম্মি। এই ঘুষ বাণিজ্য করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন এই কর্মকর্তা।
শাহাপুর ইউনিয়নের রাঘববাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমরা যে টাকা বেতন পাই, সেই টাকায় ভাগ বসান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। অফিসে গেলেই টাকা লাগবে। উপজেলায় প্রায় ১৪০০ শিক্ষক এখন তার কাছে অসহায়। আমাদের কিছুই করার নেই। কিছু বললেই শোকজ ধরিয়ে দেয়। এমনকি এই কর্মকর্তার বাড়ির বাজারও শিক্ষকদের করে দিতে হয়।
অভিযোগের বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল কুমার ঘোষ বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি কারো কাছে কোনো টাকা নিয়েছি বলে আমার মনে হয় না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জেছের আলী বলেন, বিষয়গুলো আমার নজরে নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা হবে।