অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন: এবার ফেলকরাদের আন্দোলন ঠেকাতে মাঠে উত্তীর্ণরা | শিক্ষক নিবন্ধন নিউজ

অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন: এবার ফেলকরাদের আন্দোলন ঠেকাতে মাঠে উত্তীর্ণরা

অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ফেলকরাদের আন্দোলন ঠেকাতে এবার মাঠে নেমেছেন উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।

#অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন #শিক্ষক নিবন্ধন

অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ফেলকরাদের আন্দোলন ঠেকাতে এবার মাঠে নেমেছেন উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে অবস্থিত বোরাক টাওয়ারে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।

এ সময় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ ১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতার নিদর্শন রেখে গত ৪ জুন চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর হতে একটি শ্রেণি একের পর এক বিভিন্ন অযৌক্তিক, নীতিমালা বিরোধী এবং সহিংস কর্মকাণ্ড করেই চলেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে সদ্য প্রকাশিত হওয়া ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির ও এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হতে চলেছে। এমনকি তারা এনটিআরসিএ অফিসে প্রবেশ করে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে অযৌক্তিক দাবি আদায়ে বাধ্য করছে। যেটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এমন পরিস্থিতিতে ১৮তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা কয়েকটি দাবি করেন।

দাবিগুলো হলো-

>> দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তির কাজ সম্পন্ন করে ভাইভা উত্তীর্ণদের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র প্রদান করা।

>> গণবিজ্ঞপ্তি এবং এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের স্বাভাবিক কার্যক্রমের পথে যারা বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

>> ভাইভার ফল পুনঃবিবেচনার যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তার সত্যতার ব্যাপারে বিবৃতি প্রদান করা।

>> এনটিআরসিএ এর নীতিমালার বাইরে গিয়ে কারো কোন অযৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন না করা।

>> যারা ভাইভা উত্তীর্ণ হয়েছেন প্রত্যেককে বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন করে প্রয়োজনে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা।

অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি কার্যক্রম সমাপ্তির মাধ্যমে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয় সুব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করেন তারা।

এদিকে সোমবারও ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষায় অনিয়ম ও বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং চূড়ান্ত ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণ ও সনদ প্রদানের দাবিতে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন ফেলকরা প্রার্থীরা।

এ সময় অবস্থান কর্মসূচি থেকে ‘দাবি মোদের একটাই, সনদ চাই সনদ চাই’, ‘সনদ চাই, দিতে হবে’, ‘এক দফা এক দাবি, সনদ চাই, সনদ চাই’ স্লোগান দেওয়া হয়।

চাকরি প্রত্যাশী আলাল হোসেন বলেন, ১৫ দিন ধরে আমরা লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছি, কারণ আমাদের দাবিটা যৌক্তিক। সুতরাং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।

এর আগে গত ৪ জুন বিকেলে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৩ জুন সংশোধিত ফলাফলে আরও ১১৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়।

এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফল পুনঃপরীক্ষা ও যাচাইয়ের পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। এরপরই ফলাফলে অসঙ্গতি ও বৈষম্যের অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেন অকৃতকার্য হওয়া অনেক প্রার্থী।

তারা দাবি করেন, ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল করার পরও অনেকে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। বিশেষ করে বোর্ড ভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক তারতম্যের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে ১ থেকে ৩ জন পাস করেছেন। অন্যদিকে কিছু বোর্ডে ২৯ জনও পাস করেছেন- যা নিয়ে চাকরি প্রত্যাশীরা ফলের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ফলাফল প্রকাশের পর আন্দোলনরত প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে এনটিআরসিএর প্রধান উপদেষ্টার সহকারী সচিব তাদের দাবি শোনেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত না হয়ে ফলাফল পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে প্রায় ১৯ লাখ প্রার্থী আবেদন করেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ৮১ হাজার ২০৯ জন। চূড়ান্তভাবে ৬০ হাজার ৬৩৪ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এগুলো পূরণে সব প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হবে।

#অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন #শিক্ষক নিবন্ধন