ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) তাদের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে ‘সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার’ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সোমবার রাজধানীর নিকুঞ্জ কনভেনশন হলে এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের প্রথমে আমন্ত্রণ জানানোর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুতের অন্যতম বৃহৎ ভোক্তা। একইসাথে, শিক্ষকদের সামান্য সচেতনতা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বীজ বপন করতে পারে।
ভবিষ্যতে কর্মজীবনে প্রবেশ করে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় এই অভ্যাস তাদের বাস্তব জীবনে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ এনডিসি, পিএসসি (অব.)।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সকলের সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ অন্য কারো প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক হবে এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের মূল্যবান পরামর্শ বাস্তবায়নের জন্য ডেসকো বদ্ধপরিকর।
ডেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, কোনো ভালো কাজই মূল্যহীন নয়। বর্তমানে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটে সরকার ৫ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে অতীতের অনিয়মের কারণে বর্তমানে যে আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা সকলেরই জানা। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি প্রদান করতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে হলে প্রত্যেককে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে ডেসকোর নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) মো. কামরুল ইসলাম পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের গুরুত্ব এবং প্রি-পেইড মিটারের সুবিধা সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
এরপর প্রশ্নোত্তর পর্বে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী জুলফিকার তাহমিদ এবং নির্বাহী পরিচালক (প্রকৌশল) প্রকৌশলী মো. মনজুরুল হক আমন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ডেসকোর এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, এই ধরনের সভা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে বিবেক ও নৈতিকতাকে কাজে লাগানোর ওপর জোর দেন।
বিজিএমইএ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক সিরাজুল করিম চৌধুরী বিদ্যুৎ সংক্রান্ত জটিল বিষয়গুলো সহজভাবে জনগণের কাছে তুলে ধরার এবং নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এমন অটোমেশন প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
সভায় অন্যান্য প্রতিনিধিগণও মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারলে তাদের জন্য প্রণোদনার (ইনসেনটিভ) প্রস্তাব করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে ডেসকো বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম একটি উপযুক্ত প্রক্রিয়া প্রণয়নের মাধ্যমে প্রণোদনা প্রদানের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে ডেসকো আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং ডেসকোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।