শিক্ষার্থীদের দক্ষতা নিশ্চিত হলে মানসম্মত চাকরির পথ সুগম হবে: উপাচার্য আমানুল্লাহ | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

শিক্ষার্থীদের দক্ষতা নিশ্চিত হলে মানসম্মত চাকরির পথ সুগম হবে: উপাচার্য আমানুল্লাহ

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন কারিকুলাম কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীদের মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে পেশা নির্বাচনে পরামর্শ প্রদানের জন্য অধিভুক্ত কলেজসমূহে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

#শিক্ষার্থী #চাকরি #দক্ষতা #জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, সময়োপযোগী দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি ও অধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ নিশ্চিত করতে পারে। স্কিল বেজড কারিকুলাম প্রণয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা সৃষ্টি ও উদ্যোক্তা গড়ে তোলা গেলে বেকারত্ব উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে।

এ লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত কোর্সের সঙ্গে অন্তত দুইটি প্রফেশনাল/কারিগরি/ভোকেশনাল কোর্স যুক্ত করে কারিকুলাম সংস্কার করা হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের গুণগত, মানসম্পন্ন, জ্ঞাননির্ভর, সৃজনশীল, দক্ষতাভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিতে ব্যাপক সংস্কারমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত ২৭তম সিনেট অধিবেশনে চেয়ারম্যানের অভিভাষণে একথা বলেন তিনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন কারিকুলাম কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীদের মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে পেশা নির্বাচনে পরামর্শ প্রদানের জন্য অধিভুক্ত কলেজসমূহে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এলক্ষ্যে BYLC Career Center এর সাথে MoU স্বাক্ষরিত হয়েছে। MoU অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে BYLC ১০০টি কলেজে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠনের জন্য রুম তৈরি করে দেবে। যার প্রথমটি চালু হয়েছে রাজধানীর লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজে। সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের অনার্স কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে, যা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো। কারিকুলাম সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা এক্সামিনেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম(ইএমএস) এর আওতায় আনা এবং কলেজ র‍্যাঙ্কিং, মডেল কলেজ নির্বাচন ও ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া জুলাই বিপ্লবের শহীদদের নামে বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উপাচার্য আরো বলেন, “প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে বগুড়া ও হবিগঞ্জে নতুন আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু ও কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। হবিগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা হয়েছে। দেশের সব জেলায় পরীক্ষা কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা আছে । বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংবিধান, আইন, ভাষা, শিক্ষা, পরিবেশ ও উন্নয়ন ভাবনাসহ উচ্চতর মানববিদ্যা ও যুগোপযোগী অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ চেয়ার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর দক্ষতা বৃদ্ধি, উন্নত ও সুযোগ-সুবিধার পথ তৈরিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাডেমিক এক্সচেঞ্জ ও সহযোগিতামূলক যৌথ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ৩১টি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পড়ানো হয়। এর সঙ্গে কৃষি, মৎস্য, স্বাস্থ্য ও কারিগরি বিষয়ক শিক্ষা যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ নদীমাতৃক বাংলাদেশ একটি কৃষি নির্ভর দেশ, যার ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।

অধিবেশনে ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের জন্য ৬৯০ কোটি ১৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট ও ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের ৪১৭ কোটি ৩ লক্ষ ১৯ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। সিনেট অধিবেশনের পূর্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামফলক উন্মোচন করেন উপাচার্য।

অধিবেশনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সিনেট চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও শোক প্রস্তাবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. নূরুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদসহ ৭৭ জন সিনেট সদস্য, আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্যগণ (অতিথি হিসেবে), সিনেট সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন অংশগ্রহণ করেন ।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষার্থী #চাকরি #দক্ষতা #জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়