‘দেশ ছাড়ার’ সময় আটক বিমানের নারী কেবিন ক্রু | বিবিধ নিউজ

‘দেশ ছাড়ার’ সময় আটক বিমানের নারী কেবিন ক্রু

ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা অনিমার কাগজপত্র সন্দেহজনক মনে করলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যাচাইয়ে নিশ্চিত হয় যে, অনিমার কাগজপত্র ভুয়া। ফলে তাকে ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

#বিমান #বাংলাদেশ

ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে ধরা পড়েছেন বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রু জেরিন তাসনিম অনিমা।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় তার এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে ৫৮৭) একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল।

সূত্র জানিয়েছে, ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা অনিমার কাগজপত্র সন্দেহজনক মনে করলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যাচাইয়ে নিশ্চিত হয় যে, অনিমার কাগজপত্র ভুয়া। ফলে তাকে ফ্লাইটে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় বিমানের অভ্যন্তরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মুখপাত্র এবিএম রওশন কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিমানের কর্মীদের বিদেশ যেতে এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) প্রয়োজন। অনিমার এনওসি বৈধ ছিল না। তিনি এক বছরের স্টাডি লিভের আবেদন করেছিলেন, যা অনুমোদিত হয়নি। তাই ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে যাত্রার অনুমতি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা চাকরিবিধি পরিপন্থী। বিমান কর্র্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

জানা গেছে, অনিমার বাবা মো. আশরাফ আলী সরদার প্রিন্স বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে ফ্লাইট পার্সার হিসেবে কর্মরত। তার পদপদবির সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসছিলেন অনিমা। হজ মৌসুমে কেবিন ক্রুদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ভুয়া চিকিৎসা সনদ দাখিল করে ছুটি নেন। গত ১ মার্চ থেকে তিনি মেডিক্যাল ছুটি নেন, যা ১৪ দিন করে কয়েক দফায় বাড়িয়ে ২৯ মে পর্যন্ত নেওয়া হয়। তার হাতের প্লাস্টার ও এক্স-রে রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, অন্য ব্যক্তির এক্স-রে রিপোর্ট ব্যবহার করে বিমানের চিকিৎসক ডা. মাসুদের সহায়তায় তিনি ভুয়া চিকিৎসা সনদ তৈরি করেন।

এ ছাড়া তার স্টাডি লিভের আবেদন নিয়মবহির্ভূত ছিল, কারণ চাকরির বয়স তিন বছর না হলে এ ধরনের ছুটি মঞ্জুরযোগ্য নয়। অনিমার চাকরির বয়স মাত্র দুই বছর হলেও তার বাবা তদবির করে এ ছুটির অনুমোদনের চেষ্টা করেন। ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা এড়াতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করা হয়। গত এপ্রিলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পান। পরে বিমানের প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই তার বাবা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন।

বিমানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনিমা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। অতীতে বিমানের কেবিন ক্রু, ইঞ্জিনিয়ার ও ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়াররা এভাবে বিদেশে গিয়ে দেশে ফেরেননি। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব কর্মী দেশের জন্য কিছু না করেই বিদেশে মেধা বিক্রি করছেন, যা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন সাহস না করে।

#বিমান #বাংলাদেশ