প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্বও পাচ্ছে এনটিআরসিএ | শিক্ষক নিবন্ধন নিউজ

প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্বও পাচ্ছে এনটিআরসিএ

‘২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে আমরা এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমরা ক্ষমতার বাইরে। দৈনিক আমাদের বার্তার টকশো এবং প্রতিবেদনে জানলাম, পতিত সরকার শুধু এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য এনটিআরসিএর সনদ ও সুপারিশ কার্যকর করে আরেক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।’

#শিক্ষক #শিক্ষক নিবন্ধন #এনটিআরসিএ

অবশেষে প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগের দায়িত্ব পাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।  পতিত আওয়ামী লীগ দলীয় কয়েকজন সংসদ সদস্য ও এনটিআরসিএর সাবেক কয়েকজন চেয়ারম্যানের বাধায় এতোদিন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রতিষ্ঠানটির হাতে দেয়া যায়নি। শুধু এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগে চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। বিরোধিতাকারীদের যুক্তি ছিলো, এতে এনটিআরসিএর কাজের চাপ বাড়বে। কিন্তু আর্থিকভাবে খুব লাভ হবে না।

এসব ঘটনা ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের। তারপর থেকেই প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগও এনটিআরসিএর হাতে দেওয়ার দাবি জোরালো হয়ে উঠতে উঠতে এখন তুঙ্গে। এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কর্মচারী নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএকে দেওয়ার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্বও পাচ্ছে এনটিআরসিএ

প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্বও পাচ্ছে এনটিআরসিএ

বর্তমানে এনটিআরসিএ শুধু এন্ট্রি লেভেলে (সহকারি শিক্ষক, প্রভাষক ইত্যাদি) নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাই ও সুপারিশ করে। ফলে নিয়োগ বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়েছে। প্রশাসনিক ও অশিক্ষক পদের প্রার্থী বাছাই ও সুপারিশের দায়িত্ব এনটিআরসিএর হাতে না থাকায় কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য, মামলা ও হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব পদ এনটিআরসিএর হাতে গেলে দুর্নীতি, হানাহানি ও মামলার উৎপত্তি বন্ধ হবে। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে আসতে চাওয়া ব্যক্তিরা নিরুৎসাহিত হবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে মতামত দেওয়ার জন্য গত ৩০ জানুয়ারি এনটিআরসিএকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরকে এক প্রস্তাব পাঠান। প্রস্তাবে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান ও সহকারি প্রধান, সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারি সুপার এবং অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ থেকে প্রার্থী নির্বাচন ও সুপারিশ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পাঠানো হলো।’    

এতে এনটিআরসিএ আইন সংশোধন ও একটি নতুন ধারা ও উপধারা সংযোজন এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান এবং অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ বিধিমালা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে। সংসদ কার্যকর না থাকায় অর্ডিন্যান্স জারির কথাও বলা হয়েছে।

২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী এন্ট্রি লেভেলে (প্রভাষক, সহকারী শিক্ষক) শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএর। আর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান ও কর্মচারীদের নিয়োগ এখনও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা কমিটির/পর্ষদের হাতে। এসব নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ বিস্তর।

বর্তমানে সারাদেশে ৩০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। যার আমলাতান্ত্রিক নাম এমপিও। এছাড়াও কয়েকলাখ শিক্ষক আছেন ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আবার এমপিওভু্ক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খণ্ডকালীন নামে হাজার হাজার ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।

সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে আমরা এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমরা ক্ষমতার বাইরে। দৈনিক আমাদের বার্তার টকশো এবং প্রতিবেদনে জানলাম, পতিত সরকার শুধু এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য এনটিআরসিএর সনদ ও সুপারিশ কার্যকর করে আরেক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ যারা এমপিওভুক্ত ও খণ্ডকালীন কাল তারা এমপিওভুক্ত হবেন। সুতরা এনটিআরসিএ কেন শুধু এমপিওভু্ক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রার্থী বাছাই করে আইন ভঙ্গ করে আসছে। এমপিও-ননএমপিও সবাই তো একই বই পড়ান, শিক্ষার্থীরাও সবাই বাংলাদেশি। তাহলে কারো জন্য এনটিআরসিএ সুপারিশকৃত ও বাছাইকৃত আবার কারো জন্য জন্য নয়—এটাতে হতে পারে না।  

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষক #শিক্ষক নিবন্ধন #এনটিআরসিএ