নতুন করদাতাদের জন্য বাজেটে সুসংবাদ আসছে | বিবিধ নিউজ

নতুন করদাতাদের জন্য বাজেটে সুসংবাদ আসছে

নতুন করদাতাদের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সুসংবাদ আসছে।

#বাজেট #আয়কর

নতুন করদাতাদের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সুসংবাদ আসছে। রিটার্ন দাখিলে উদ্ধুদ্ধকরণে তাদের ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা হতে পারে বলে জানা গেছে। এর ফলে নতুন করদাতারা রিটার্ন দাখিলে আরও উৎসাহ দেখাবেন বলে আশা করছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।

দেশে কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অবশ্য ‘করবৈষম্য’ কমিয়ে আনতে শহরের মতো গ্রামের করদাতাদেরও ব্যক্তিশ্রেণির ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে-মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ মানুষের করভার লাঘবে করমুক্ত আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়ানো হতে পারে। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিদ্যমান কর কাঠামো অনুযায়ী, ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মহিলা করদাতাদের এই সীমা ৪ লাখ, প্রতিবন্ধীদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার এবং গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ লাখ টাকা। আয়করের বর্তমান স্ল্যাব অনুযায়ী, সাড়ে ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার মধ্যে বার্ষিক আয় থাকলে করদাতাদের ৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। পরবর্তী ৪ লাখ টাকার (মোট আয় সাড়ে ৮ লাখ টাকা) ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখের (মোট আয় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা) ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখের (মোট আয় সাড়ে ১৮ লাখ টাকা) ওপর ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখের (সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা) ওপর ২৫ শতাংশ এবং অবশিষ্ট আয়ের (করযোগ্য আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা পার হলে) ওপর ৩০ শতাংশ হারে আয়কর ধার্য আছে।

সূত্র জানায়, নতুন করদাতাদের করভার লাঘবে এনবিআর আগামী বাজেটে কর কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আনছে। যেসব করদাতা প্রথমবার রিটার্ন জমা দেবে, তারা এক হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে যে কোনো অঙ্কের কর দিতে পারবে। অর্থাৎ নতুন করদাতাদের সর্বনিু আয়কর এক হাজার টাকা বলা যেতে পারে।

আয়করসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসছে বাজেটে এ ধরনের পদক্ষেপ রাখা হলে তা হবে যুগান্তকারী। মানুষ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আয়কর দিতে আগ্রহী হবেন। তবে এ ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের পাশাপাশি কর কর্মকর্তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। কর কর্মকর্তাদের আচরণ এমন হওয়া উচিত নয়, যাতে করদাতারা ভাবতে বাধ্য হন যে, তারা কর দিয়ে ফেঁসে গেছেন। সব শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন জমা আরও সহজ করা যেতে পারে। এজন্য প্রয়োজনে এনবিআর সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, এ ধরনের পদক্ষেপ এর আগেও নিয়েছে এনবিআর। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন জমায় উৎসাহিত করতে ন্যূনতম কর ২ হাজার টাকা করা হয়। যদিও এ সুফল সাধারণ করদাতারা পেয়েছেন কি না বা কতজন করদাতা এ সুযোগে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছে, এনবিআরে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

অন্যদিকে শহর ও গ্রামের মধ্যে করবৈষম্য কমিয়ে আনতে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার ন্যূনতম আয়কর সব অঞ্চলের জন্য ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। আর্থিক বৈষম্য কমিয়ে এনে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সর্বপ্রথম ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে অঞ্চলভিত্তিক করহার চালু করা হয়।

বর্তমানে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশনের বাইরে পৌর এলাকা ও গ্রামাঞ্চলের করদাতাদের কর ৩ হাজার টাকা বিদ্যমান রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে অঞ্চলভেদে ব্যক্তিশ্রেণির ন্যূনতম করহার বাড়ানো হয়। সেই থেকে আজ অবধি একই হারে করদাতারা কর দিয়ে আসছেন। এ সময় করমুক্ত আয়ের সীমা একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হতে পারে।

#বাজেট #আয়কর