জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে এসে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বিস্তারিতভাবে জানান।

#জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় #বিশ্ববিদ্যালয় #ইউজিসি #জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাঝে এসে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বিস্তারিতভাবে জানান।

অধ্যাপক ফায়েজ জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতি সরকার সহানুভূতিশীল। বিশ্ববিদ্যালয়টির সুষ্ঠু পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বাজেট বৃদ্ধি করা। শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এছাড়া কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, অপর্যাপ্ত বাজেট এবং আবাসন সংকটের কারণে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং জীবনযাত্রার মান নিম্নমুখী।

আন্দোলনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। তারা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রশাসনিক ভবন অবরোধের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের দাবি কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ মহলে স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।

তবে, দীর্ঘ সময় ধরে তাদের দাবিগুলো পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়তে থাকে।

সম্প্রতি, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও জোরালো রূপ নেয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

তাদের এই লাগাতার আন্দোলনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের মধ্যেই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাধিকবার শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসার চেষ্টা করলেও, সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়ায় আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। তাদের দাবির যৌক্তিকতা সরকারের কাছে তুলে ধরেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের সাথে বিস্তারিত আলোচনার পর সরকার অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

আজ সন্ধ্যায় অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ যখন আন্দোলনস্থলে এসে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।

তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সরকার অবিলম্বে বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাজেটের পরিমাণ কত হবে এবং কোন খাতে কত অর্থ বরাদ্দ করা হবে, তা শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

বাজেট বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।  শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আবাসন সংকট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের একটি প্রধান সমস্যা। প্রায় সব শিক্ষার্থীকেই বেসরকারি মেসে অথবা ভাড়া বাড়িতে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে হয়। এই সমস্যার সমাধানে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ফায়েজ।

তিনি বলেন, আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শিগগিরই অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে কতগুলো হল নির্মাণ করা হবে এবং এর ধারণক্ষমতা কত হবে, তা নিয়ে শীঘ্রই বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে।

অস্থায়ী হল নির্মাণের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ আরো একটি দাবি ছিল কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা।

অধ্যাপক ফায়েজ এই বিষয়েও সুখবর দেন। তিনি জানান, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দও নিশ্চিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু হলে শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।

অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও সংযমের প্রশংসা করেন। তাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সরকারের ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ আরও উন্নত হবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারবে  আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা ইউজিসি চেয়ারম্যানের ঘোষণার পর তাদের আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা সরকারের এই ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। আশা প্রকাশ করেছেন যে খুব শীঘ্রই এই সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হবে।

দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর অবশেষে তাদের দাবি পূরণ হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।

এখন দেখার বিষয়, সরকার কত দ্রুত এই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে পারে।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় #বিশ্ববিদ্যালয় #ইউজিসি #জবি