৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতাসহ ৫ দাবি সরকারি কর্মচারীদের | বিবিধ নিউজ

৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতাসহ ৫ দাবি সরকারি কর্মচারীদের

বৈষম্য নিরসনে ১০ ধাপে বেতন নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

#মহার্ঘ ভাতা #সচিবালয় #শিক্ষা কর্মকর্তা #কর্মসংস্থান #বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ বেতন বৈষম্য নিরসন এবং আর্থিক সংকট মোকাবিলার দাবিতে সরব হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি অবিলম্বে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান এবং নবম বেতন কমিশন গঠনের জোর দাবি জানিয়েছে।

একই সাথে, কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে আরও চারটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংগঠনের মহাসচিব নোমানুজ্জামান আল আজাদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সরকারি কর্মচারীরা আর্থিক প্রশাসনিক চরম বৈষম্যের শিকার। স্বৈরশাসনের অবসান হলেও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা রয়েছে। যারা কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এই বৈষম্য কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজারদরের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই, এই পরিস্থিতিতে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান সময়ের দাবি।

নোমানুজ্জামান আল আজাদ বৈষম্য নিরসনে ১০ ধাপে বেতন নির্ধারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এবং এর বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একটি সুষম বেতন কাঠামো প্রণয়নের মাধ্যমে কর্মচারীদের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রশমন করা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ সারোয়ার হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারীরা দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

কিন্তু তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি সরকারের প্রতি দ্রুত তাদের দাবিগুলো বিবেচনা করার আহ্বান জানান।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে মো. আজিম, বদরুল আলম সবুজ, মো. রোকনুজ্জামান, জিল্লুর রহমান খান, ইউসুফ আলী, মোহাম্মদ আলী, কুতুব উদ্দিন সেলিম, এম. আউয়াল এবং ফাহমিদা আক্তার ইলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যেকেই তাদের বক্তব্যে কর্মচারীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ আগামী ১০ এবং ১১ মে দুই দিনব্যাপী তাদের একাদশ জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা করেছে।

এই সম্মেলনকে কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাদের এই জাতীয় সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, ভিয়েতনাম এবং ভারতের বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই সম্মেলনের গুরুত্ব এবং সরকারি কর্মচারীদের অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরাই এর মূল উদ্দেশ্য।

বিদেশি প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ এই আন্দোলনের একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে সহায়ক হবে বলে আশা করেন সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের উত্থাপিত পাঁচ দফা দাবি হলো:

. অবিলম্বে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখার জন্য এই দাবিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

. নবম বেতন কমিশন গঠন: দীর্ঘদিনের বেতন বৈষম্য নিরসন এবং একটি আধুনিক যুগোপযোগী বেতন কাঠামো প্রণয়নের জন্য অবিলম্বে নবম বেতন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।

. ১০ ধাপে বেতন নির্ধারণ: বিদ্যমান বেতন কাঠামোতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। একটি সুষম বেতন কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য ১০ ধাপে বেতন নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে।

. পদোন্নতির সুষম সুযোগ: বিভিন্ন দপ্তরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য দেখা যায়। সকল স্তরের কর্মচারীদের জন্য পদোন্নতির সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

. যৌক্তিক পেনশন ব্যবস্থা: সরকারি কর্মচারীদের অবসরকালীন জীবন নিরাপদ করার জন্য একটি যৌক্তিক এবং টেকসই পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের এই সংবাদ সম্মেলন এবং জাতীয় সম্মেলনের ঘোষণা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বেতন অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এই কর্মজীবীরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।

 

#মহার্ঘ ভাতা #সচিবালয় #শিক্ষা কর্মকর্তা #কর্মসংস্থান #বাংলাদেশ