খুঁটিতে বেঁধে প্রধান শিক্ষককে মারধর | বিবিধ নিউজ

খুঁটিতে বেঁধে প্রধান শিক্ষককে মারধর

জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আবদুর রহমান নামে হাই স্কুলের এক প্রধান শিক্ষককে জনসম্মুখে বেঁধে রেখে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

#প্রধান শিক্ষক

জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আবদুর রহমান নামে হাই স্কুলের এক প্রধান শিক্ষককে জনসম্মুখে বেঁধে রেখে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

হেনস্তা ও মারধরের শিকার আবদুর রহমান বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল কদুখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওই শিক্ষক সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বুচির পাড়ার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শামসু মাস্টারের বাড়ির শামসুল ইসলামের পাঁচ ছেলে মো. হানিফ, মো. হান্নান, মো. সোহাগ, মো. ইকবাল, আবু বক্কর, ও আবু বক্করের ছেলে মুসলিম উদ্দিন হিরু।

জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে শিক্ষক আবদুর রহমান পরিবারের সঙ্গে আবু বক্করের পরিবারের জায়গা সংক্রান্ত একটি বিরোধ ছিল। সে সময় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়। এরপর শিক্ষক আবদুর রহমানের ভাই-বোনরা আবু বক্করের পরিবারের কাছে কিছু জায়গা বিক্রি করেছিল। কিন্তু শিক্ষক আবদুর রহমান তার অংশ বিক্রি করেননি।

ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে শিক্ষক আবদুর রহমানকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের দস্তিদার হাট বাজারের একটি দোকানে ডেকে নিয়ে যান অভিযুক্ত মো. হানিফ। পরে সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সব অভিযুক্ত মিলে শিক্ষক আবদুর রহমানকে দোকানের একটি খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধেন। এরপর তাকে হেনস্তা ও বেধড়ক মারধর করেন।

শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, অভিযুক্তরা সবাই মিলে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি খালি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি স্বাক্ষর না দেওয়ায় অভিযুক্তরা আমাকে জনসম্মুখে একটি দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রথমে হেনস্তা করেন। এরপর তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। তারা আমার চোখে আঘাত করেছে। বর্তমানে আমি দুটি চোখে ভাল করে দেখছি না। মামলা করলে তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ ঘটনার অভিযুক্ত মো. হানিফের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরে অপর এক অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিন হিরু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ব্যাখা দিয়ে বলেন, শিক্ষক আবদুর রহমানের সর্বমোট ১২ জন ভাই-বোন। তারা আমাদের কাছে কিছু জায়গা বিক্রি করেছিলেন। তাদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে আমাদের রেজিস্ট্রি দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষক আবদুর রহমান ওই জায়গায় তার অংশটুকু বিক্রি করেননি। তবে তিনি তার মূল জায়গা থেকে কয়েকগুণ বেশি দখল করে রেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তাকে ১০ থেকে ১৫ বার বলেছি। কিন্তু তিনি বিষয়টি কানে নেননি। ঘটনার দিন তিনি দোকানে এসেছিলেন। তখন আমার বাবা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমার বাবাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। আমার বাবা আঘাত পাওয়ার পরে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা তাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখি। পরে তার সঙ্গে আমাদের হাতাহাতি হয়।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনার বিষয় আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

#প্রধান শিক্ষক