ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার সিদ্ধান্ত রুখে দেয়ার ঘোষণা হেফাজতের | বিবিধ নিউজ

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলার সিদ্ধান্ত রুখে দেয়ার ঘোষণা হেফাজতের

আমরা খাল কেটে কুমির আনার ক্ষমতা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্ট) দেইনি। জুলাই হত্যাকা-ে গণঅভ্যুত্থানে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিত দেশবাসী পায়নি।

#হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ #বিক্ষোভ #সমাবেশ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার অনুমতি দেয়ার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত রুখে দেয়ার ঘোষণা করে বলেছেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার চক্রান্ত যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।

আমরা খাল কেটে কুমির আনার ক্ষমতা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্ট) দেইনি। জুলাই হত্যাকা-ে গণঅভ্যুত্থানে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিত দেশবাসী পায়নি। মানবাধিকারের নামে এদেশে কাদিয়ানিদের প্রতিষ্ঠা, মুসলিম পারিবারিক ব্যবস্থ ভেঙ্গে দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে মানবাধিকারের অফিস খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসুন।

আমরা এই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি। ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও তা’ বাতিলের দাবিতে গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সমাবেশে বক্তারা জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আঞ্চলিক কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং একে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের পরিবর্তে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা জনআকাঙ্খার পরিপন্থী ও স্বাধীনতার মৌলিক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

গত ১৬ বছরে ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, গুম ও খুনের বিচার নিশ্চিত না করে এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জন্য দরজা খুলে দেওয়া মানে অপরাধীদের দায়মুক্তি ও জনগণের প্রতি অবিচার। তিনি আরও বলেন, ড. ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা স্পষ্ট করে বলি আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতা করেছি দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে।

শহীদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত এই সরকারকে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি। জাতিসংঘের তথাকথিত মানবাধিকার বাস্তবে ইসলাম ও মানবতার পরিপন্থী পশ্চিমা আদর্শের হাতিয়ার। আমরা এই মানবাধিকার কার্যালয় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে দিবো না।

তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, আজ আমরা শুধু প্রাথমিক প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্ত সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে না আসে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সারা দেশে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে। সমাবেশে বলা হয়, ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেশের স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে দিতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম-খুনের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ঈমানি দায়িত্ব ও জাতীয় কর্তব্য থেকে আমরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলবো এবং প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেবো।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী,মুফতি মো.ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মুফতী শরীফুল্লাহ, মাওলানা ইমরানুল বারী সিরাজী, মাওলানা জোবায়ের রশীদ। পরে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সংগঠনে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব।

#হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ #বিক্ষোভ #সমাবেশ