ভারতের মধ্যপ্রদেশের খারগোন জেলার একলব্য আদর্শ বিদ্যালয়ে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ও লাইব্রেরিয়ানের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও চুলোচুলিতে রূপ নেয়।
এনডিটিভির সূত্রে জানা যায়, তাদের এই সংঘর্ষ রীতিমতো কুস্তির আকার ধারণ করে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে উভয়কেই বরখাস্ত করেছে।
এছাড়াও, তারা একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, দুই নারী শিক্ষিকা প্রথমে উচ্চস্বরে তর্ক করছেন। লাইব্রেরিয়ান যখন সেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ভিডিও ধারণ করছিলেন, তখন প্রিন্সিপাল ক্রোধান্বিত হয়ে লাইব্রেরিয়ানকে চড় মারেন এবং তার ফোন কেড়ে নিয়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে লাইব্রেরিয়ান প্রিন্সিপালের কাছে চড় মারার এবং ফোন ভাঙার কারণ জানতে চান। প্রিন্সিপাল তখন পুনরায় ফোনটি তুলে আবার ছুড়ে মারেন।
পরিস্থিতি এরপর আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। লাইব্রেরিয়ান প্রিন্সিপালের ওপর পাল্টা চড়াও হন। প্রিন্সিপাল আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে দুজনের মধ্যে শারীরিক সংঘর্ষ শুরু হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, তারা একে অপরের চুল ধরে টানাটানি করছেন এবং মারামারি করছেন। এই সময় ভিডিওতে একটি কিশোরের কণ্ঠস্বর শোনা যায়, যে তাদের থামানোর জন্য অনুরোধ করছে।
অবশেষে, অন্য এক নারী এসে শান্তভাবে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন।
সামাজিক মাধ্যমে এই ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। একজন ব্যবহারকারী এক্সে (সাবেক টুইটার) মন্তব্য করেছেন, মারামারি থামানোর জন্য এগিয়ে আসা পরিচ্ছন্নতাকর্মী মহিলাটি সবচেয়ে ভালো কাজ করেছেন।
অন্য একজন লাইব্রেরিয়ানের ভিডিও ধারণের কাজটিকে ‘অত্যাধিক চালাকি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, টিকটক সংস্কৃতির প্রভাবে মানুষ মূল্যবোধ হারাচ্ছে।
তবে, অনেকেই প্রিন্সিপালের আক্রমণাত্মক আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তাকে ‘একজন গুন্ডি বলেও অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত এবং নিন্দনীয়।
এই ঘটনাটি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা এবং শিক্ষকদের আচরণের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে উভয় অভিযুক্তকে বরখাস্ত করেছে এবং বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।
তবে, এই ধরনের ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, কর্মক্ষেত্রে সহনশীলতা এবং পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা কতটা জরুরি। সামান্য বিরোধও কিভাবে সহিংস রূপ নিতে পারে, তা এই ঘটনায় স্পষ্ট। বিদ্যালয়ের মতো একটি পবিত্র স্থানে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং সমাজের জন্য একটি খারাপ উদাহরণ।
বর্তমানে পুলিশ উভয় পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে এবং ঘটনার পেছনের আসল কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করছে। বরখাস্ত হওয়া প্রিন্সিপাল ও লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হতে পারে।
এই ঘটনা শিক্ষা মহলে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি করেছে এবং শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এনেছে।