দিনের শেষে রির্জাভ ২০.১৮ বিলিয়ন ডলার | বিবিধ নিউজ

দিনের শেষে রির্জাভ ২০.১৮ বিলিয়ন ডলার

মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। দিনের শেষে তা সামান্য কমে ২০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কারণ কিছু বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের আমদানি বিল বাবদ ১ দশমিক ৮৮৩ বিলিয়ন (১৮৮ কোটি ৩০ লাখ) মার্কিন ডলার পরিশোধ করার পরেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গ্রহণযোগ্য অবস্থানে রয়েছে।

মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। দিনের শেষে তা সামান্য কমে ২০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কারণ কিছু বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত মার্চ এপ্রিল মাসের আমদানি বিল বাবদ দশমিক ৮৮৩ বিলিয়ন (১৮৮ কোটি ৩০ লাখ) মার্কিন ডলার পরিশোধ করার পরেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গ্রহণযোগ্য অবস্থানে রয়েছে।

রেমিট্যান্সের অবিরাম প্রবাহ এবং রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা এই স্থিতিশীলতার মূল কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।  

বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের-আকুর বিল বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা সত্ত্বেও রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের কোনো চাপ পড়েনি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় একটি গ্রহণযোগ্য স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো প্রবাসীদের নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠানো এবং রপ্তানি আয়ে বজায় থাকা ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। যার পরিমাণ ছিল ৪৮ দশমিক শূন্য বিলিয়ন ডলার।

তবে, পরবর্তীকালে বিভিন্ন কারণে রিজার্ভের পরিমাণ কমতে শুরু করে। গত বছরের জুলাই মাসের শেষে রিজার্ভ ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল।

তবে, গত বছরের আগস্ট নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করার নীতি গ্রহণ করা হয়।

পাশাপাশি অর্থপাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে পূর্ববর্তী সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলারের মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়া পরিশোধ করার পরেও রিজার্ভ একটি সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে মোট রিজার্ভ ছিল হাজার ৭৩৫ কোটি ডলার বা ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী বিপিএম- বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ছিল হাজার ১৯৭ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।

এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, বিপুল পরিমাণ আমদানি বিল পরিশোধ করার পরেও দেশের প্রকৃত রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে। যা একটি ইতিবাচক লক্ষণ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারি এবং রেমিট্যান্স রপ্তানি আয়ের স্থিতিশীল প্রবাহ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। গ্রহণযোগ্য মাত্রার রিজার্ভ বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক দায় পরিশোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রিজার্ভের স্থিতিশীলতা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।

তবে, অর্থনীতিবিদরা একই সাথে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা মনে করেন, রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং রপ্তানি আয় আরও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

পাশাপাশি, আমদানি ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের প্রবাহ এবং রপ্তানি খাতের উন্নতি আগামীতেও অব্যাহত থাকবে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে।

একই সাথে, অর্থপাচার রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ রিজার্ভের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।