পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদ, বাগ ও মুজাফফরাবাদে মঙ্গলাবার গভীর রাতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা করেছে ভারত। পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডনের খবরে এমনটি দাবি করা হয়।
তবে ভারতের পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছে পাঁচটি নয়, নয়টি স্থানে হামলা করেছে তারা। যে স্থাপনাগুলো মূলত সন্ত্রাসী গোষ্টির। কোন সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপনাস্ত্র হামলা করা হয়নি।
এদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাৎক্ষণিক পাল্টা হিসেবে তারা ভারতের দুটি বিমান ভূপাতিত করেছে। দ্য ডনের খবরে এমন দাবি করা হলেও ক্ষয়ক্ষতির কোন পরিমান জানা যায়নি।
ভারতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানের কমপক্ষে তিন জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
হামলায় হতাহতের বিষয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে আরও তথ্য জানানো হবে।
পর তিনি পাকিস্তানের জিউ নিউজকে ক্ষয়ক্ষতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায় এক শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন। কোটলিতে দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
তিনি জানান, আহমেদপুরে একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। কাছের একটি বাড়িও আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে একটি শিশু ও তার বাবা–মা আটকা পড়েছেন। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকেও বুধবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী জানায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের অভিযানে পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনা সদস্যদের ওপর কোনো হামলা চালানো হয়নি।
বিবৃতিতে তারা বলেছে, কিছুক্ষণ আগে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করেছে। পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরে সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোতে আঘাত হানা হয়েছে।
যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে নয়টি জায়গায় আঘাত হানা হয়েছে।
এ হামলায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কোনো অবকাঠামোতে আঘাত হানা হয়নি দাবি করেছে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। তারা বলেছে, ‘এটি ছিল কেন্দ্রীভূত, পরিমাপিত’। এছাড়া উত্তেজনা যেন বৃদ্ধি না হয় সে বিষয়টিতেও নজর দেওয়া হয়েছে।
২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার পেছনে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে নয়াদিল্লি অভিযোগ করলেও, তা নাকচ করেছে পাকিস্তান।
এরপর থেকে দুই দেশই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। ভারত সিন্দু চুক্তি বাতিলে হুমকির পর ফের একটি নদীর পানি ছেড়ে পাকিস্তানে অকাল বন্যায় সৃষ্টি করেছে।
যার জন্য পাকিস্তানকে তার নাগরিকদের রক্ষায় জরুরী অবস্থাও ঘোষণা করতে হয়েছে। তখনই পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলো দেশটি।
এখন মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর পাল্টা হিসেবে পাকিস্তান কি পদক্ষেপ নেয় তার দিকে নজর সব মহলের।