‘ভূপাতিত করা’ ৫ যুদ্ধ বিমানের দম কত? | বিবিধ নিউজ

‘ভূপাতিত করা’ ৫ যুদ্ধ বিমানের দম কত?

ভূপাতিত বিমানগুলোর মধ্যে তিনটি অত্যাধুনিক বহুমুখী ফরাসি রাফায়েল জেট। একটি দ্বি-ইঞ্জিন রাশিয়ান মিগ-২৯। একটি সু-৩০ যুদ্ধবিমান রয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পাঁচটি বিমানের মোট মূল্য ৯৬৩ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা প্রায় ২৭১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির সমান।

#পাকিস্তান #ভারত #যুদ্ধবিমান

ভারত পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার আবহে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যম, যার মধ্যেজং গ্রুপএবংজিও টেলিভিশন নেটওয়ার্কবিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তারা জানিয়েছে যে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

এই ভূপাতিত বিমানগুলোর মধ্যে তিনটি অত্যাধুনিক বহুমুখী ফরাসি রাফায়েল জেট। একটি দ্বি-ইঞ্জিন রাশিয়ান মিগ-২৯। একটি সু-৩০ যুদ্ধবিমান রয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পাঁচটি বিমানের মোট মূল্য ৯৬৩ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা প্রায় ২৭১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির সমান।

এই বিপুল আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি, এই ঘটনা উভয় দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ভূপাতিত রাফায়েল জেটগুলোর মূল্য নিয়েও প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, একটি রাফায়েল বিমানের বর্তমান বাজার মূল্য ২৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সেই হিসেবে তিনটি রাফায়েল জেটের মূল্য দাঁড়ায় ৮৬৪ মিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই বিমানগুলো পেতে ভারতকে বিপুল পরিমাণ অর্থ গুণতে হয়েছে।

অন্যদিকে, ভূপাতিত মিগ-২৯ বিমানের বাজার মূল্য ২০২০ সালে ভারতের প্রায় ৪৮ মিলিয়ন ডলার ছিল বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া, একটি সু-৩০ যুদ্ধবিমানের বাজার মূল্য প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার।

এই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী ভূপাতিত পাঁচটি বিমানের আর্থিক ক্ষতি ভারতের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

রাফায়েল জেটের ক্রয় সংক্রান্ত সাম্প্রতিক তথ্যও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবং বুলগেরিয়ান সামরিক বাহিনীর গত মের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত ফ্রান্সের সঙ্গে ২৬টি রাফায়েল বিমান কেনার জন্য . বিলিয়ন ডলারের একটি বৃহৎ প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করেছে।

এই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিটি রাফায়েল জেটের দাম ২৮৮.৪৬ মিলিয়ন ডলার (পাকিস্তানি ৮১.৩৪৫ বিলিয়ন রুপি) তিনটি বিমানের দাম হিসেব করলে তা দাঁড়ায় ৮৬৫.৩৮ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২৪৪.০৪ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি।

সু-৩০ যুদ্ধবিমানের দামের বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, টাইমস নাউ এবং বুলগেরিয়ান সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন উদ্ধৃত করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিটি সু-৩০ যুদ্ধবিমানের দাম প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার (পাকিস্তানি ১৪. বিলিয়ন রুপি)

মিগ-২৯ বিমানের মূল্য সম্পর্কে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ২০২০ সালের জুলাইমস্কো টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে।

সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত প্রায় বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ২১টি মিগ-২৯ বিমান কেনার অনুমোদন দিয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিটি মিগ-২৯ বিমানের আনুমানিক দাম ছিল ৪৮ মিলিয়ন ডলার (১৩.৫৪ বিলিয়ন রুপি)

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি এমন এক সময়ে এল, যখন উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত।

যদিও ভারতের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। সাধারণত, এই ধরনের স্পর্শকাতর ঘটনার ক্ষেত্রে ভারত সরকার দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিজস্ব বক্তব্য পেশ করে থাকে। তবে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারতের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

যদি পাকিস্তানের এই দাবি সত্যি হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।

আকাশসীমায় এই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা উভয় দেশের মধ্যে আরও বড় সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।  যা আঞ্চলিক শান্তির জন্য একটি বড় হুমকি।

তবে, এই দাবির পেছনের কারণ এবং এর সত্যতা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় যুদ্ধের পরিস্থিতিতে বিপরীত পক্ষ মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য ধরনের তথ্য প্রচার করে থাকে। ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির পরেই প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক মহল এই পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যেকোনো ধরনের সামরিক সংঘাত বিশ্ব শান্তির জন্য উদ্বেগের কারণ।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রভাবশালী দেশ উভয় পক্ষকে সংযম বজায় রাখার এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে।

পাকিস্তানের পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি একটি গুরুতর বিষয়। এর সত্যতা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ উভয় দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ করবে।

ভারতের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এই ঘটনার প্রেক্ষাপট স্পষ্ট করতে সহায়ক হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে তাকিয়ে থাকবে।

তথ্যসূত্র: দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

#পাকিস্তান #ভারত #যুদ্ধবিমান