আওয়ামী লীগের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে পদক্ষেপ নেবে বিটিআরসি | বিবিধ নিউজ

আওয়ামী লীগের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে পদক্ষেপ নেবে বিটিআরসি

আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দলটির কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পদক্ষেপ নেবে। আজ রোববার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়েছেন।

#আওয়ামী লীগ #ফেসবুক #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার #উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দলটির কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পদক্ষেপ নেবে।

আজ রোববার ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এই তথ্য জানিয়েছেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, "আমরা উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের পরিপত্রের জন্য অপেক্ষা করছি। পরিপত্র জারি হওয়ার পরপরই এই পেজগুলো নিষিদ্ধ করার জন্য বিটিআরসির মাধ্যমে মেটা এবং অন্যান্য সমস্ত অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হবে।"

তিনি আরও বলেন, "বিটিআরসির মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হলে সেটি দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশা করছি।"

ফেসবুকে 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ' নামে দলটির একটি যাচাইকৃত (ভেরিফাইড) ফেসবুক পেজ রয়েছে। এই পেজটিতে বর্তমানে প্রায় ৪০ লক্ষ অনুসারী (ফলোয়ার) রয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসার সঙ্গে সঙ্গেই এই পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানানো হয়। পরবর্তীতে, দলের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও পেজটিতে শেয়ার করা হয়। এছাড়াও, পেজটিতে নিয়মিত বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হচ্ছে।

এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সাইবার স্পেসে তাদের কার্যক্রম এবং উপস্থিতি ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে দলটির অনলাইন প্রচার, দলের বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং সমর্থকদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। প্রায় ৪০ লক্ষ অনুসারীর একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেলে দলের অনলাইন কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের পরিপত্র জারি হওয়ার পরই এই বিষয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তকে 'অগণতান্ত্রিক' এবং 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, জনগণের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমকে বন্ধ করার এই প্রচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী এবং সমর্থকও সামাজিক মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের মতে, এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ এবং একটি রাজনৈতিক দলের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা।

এখন দেখার বিষয় হলো, বিটিআরসি কখন আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠায় এবং মেটা কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়।

অতীতে দেখা গেছে, সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পেজ এবং অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে।

তবে, একটি জাতীয় রাজনৈতিক দলের ভেরিফাইড পেজ বন্ধের ঘটনা সম্ভবত একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

একদিকে সরকার সাইবার স্পেসে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং জনগণের সাথে যোগাযোগের অধিকারের উপর জোর দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, বিটিআরসি এবং মেটা কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের দিকে সকলের নজর থাকবে।

#আওয়ামী লীগ #ফেসবুক #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার #উপদেষ্টা