পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ধরে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়ে | এমপিও নিউজ

অবৈধ নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ধরে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়ে

অবৈধ নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি : পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়ে

#এমপিও #অবৈধ নিয়োগ #পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর #শিক্ষা মন্ত্রণালয়

‘জাল সনদে শিক্ষক নিয়োগ: ডিআইএ ধরে মন্ত্রণালয় ছাড়ে!’ শিরোনামে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ অক্টোবর দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি উদাহরণসহ, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) থেকে জাল সনদ যাচাই করার জন্য এনটিআরসিএতে পাঠানো চিঠির উত্তরও জাল করার প্রমাণ তুলে ধরা হয়।

তৎকালীন শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে ব্যাখ্যা তলব করেন ডিআইএ-এর কাছে। নির্দেশনা পেয়ে দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনটিতে প্রকাশিত অভিযোগ যাচাইয়ে কমিটি গঠন করা হয়।

ডিআইএ-এর একজন উপপরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটির দুই সদস্যই ছিলেন মূলত সরকারি কলেজের শিক্ষক। কিন্তু বহু বছর তারা ডিআইএতে ‘মিনিস্ট্রি অডিটর’ পরিচয়ে কর্মরত ছিলেন।

কমিটি গঠনের কয়েক সপ্তাহ পরে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় শিক্ষাসচিবকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জাল সনদে শিক্ষক নিয়োগ: ডিআইএ ধরে মন্ত্রণালয় ছাড়ে!’ শিরোনামে দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনটির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ওই ঘটনার পর ডিআইএর তদন্ত কমিটির সদস্যদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দৈনিক শিক্ষাডটকম। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন অবধি অনুসন্ধান চলে।

পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ধরে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়ে

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিরীক্ষা ও আইন শাখার উদ্যোগে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন জাল সনদধারী ও প্যাটার্নবর্হিভুত এবং এক বিষয়ের শিক্ষক হয়ে অন্য বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ডাকা হয়।

তিন বছর আগের ডিআইএ-এর এক অডিট ও তদন্তে এসব জাল সনদধারী এবং অবৈধভাবে নিয়োগে ও এমপিওভুক্তদের চিহ্নিত ও এমপিও স্থগিতেরও সুপারিশ করা হয়।

মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে তারা ডিআইএ এর ধরা থেকে ছাড় পাওয়ার কালো সুড়ঙ্গ খুঁজে পেতে সক্ষম হন। অতপর গত ১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত শুনানি শেষে ফুরফুরা মেজাজে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সব অভিযুক্ত শিক্ষক। তাদের স্থগিত থাকা এমপিও ছাড় হবে।

আর কিছু বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সই করা এক সাইজের কাগজ খরচ করলে জাল শিক্ষকরাও ছাড় পেয়ে যাবেন।

এই জাল ও অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে ডিআইএ-এর সেই উপপরিচালকের স্ত্রীর নামটি ইতিমধ্যে ডিআইএর প্রতিবেদনেই ঘষামাজা করে বাদ দেওয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

এই সেই উপপরিচালক যিনি প্রতিবেদন দিয়েছিলেন যে, দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনের (২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ অক্টোবরের) সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অনুন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিআইএর ডিডি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দেও ডিআইএতে সহকারি শিক্ষা পরিদর্শক পদে ছিলেন। এবং ওই সময়েই জাল জালিয়াতি করে নিজ স্ত্রীকে দক্ষিণ বনশ্রী মডেল স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। ছাত্রজীবনে তিনি কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর নিজের চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময় ডিআইএতে কাটিয়েছেন।

গত ১৫ বছরে ডিআইএতে টিকে থাকতে তিনি বর্তমানে বিদেশে পলাতক সাবেক অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ সিন্ডিকেট ম্যানেজ করে চলেছেন।

গত ১ জুনের শুনানি সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান শুনানির ফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের কিছু জানানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি ও প্রবীন শিক্ষক নেতা অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘ধরা ও ছাড়ার মধ্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের কোটি কোটি টাকা অডিটরদের পকেটে চলে যায়। এই ধরা ও ছাড়ার যে সংস্কৃতি গত ১৬/১৭ বছরে প্রতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে সেগুলো কঠোর হস্তে বন্ধ করতে হবে।

ডিআইএ নামে পরিচিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরটি ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনেকবছর এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ছিলেন।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#এমপিও #অবৈধ নিয়োগ #পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর #শিক্ষা মন্ত্রণালয়