মুরাদনগরে প্রধান শিক্ষক নেই ৮১ প্রাথমিকে | স্কুল নিউজ

মুরাদনগরে প্রধান শিক্ষক নেই ৮১ প্রাথমিকে

‘প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ওই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে তাদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।’

#স্কুল #শিক্ষক

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে চলছে ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। অনেকদিন ধরে উপজেলার এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মোট ১শ ৩৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য।

মাসের পর মাস ধরে এ সব পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও শিক্ষা কার্যক্রম ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২২ ইউনিয়নে ২শ ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ৭৭টিতে। এছাড়া চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ৪৬ জন। ৮১টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য।

এবাদে ২শ ৪টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে, ১ হাজার ২শ ৪১টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১ হাজার ১শ ৮ জন। বাকি ১শ ৩৩টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। উপজেলার এতগুলো বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ওই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে তাদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

এতে বাকি শিক্ষকদের ওপর পাঠদানের বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। আবার প্রধান শিক্ষক না থাকলে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়। ফলে, দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার চুলুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম শাহিন বলেন, আমি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের সব কাজ আমাকেই করতে হয়। বিদ্যালয়টিতে এখন আমিসহ মোট তিনজন শিক্ষক কর্মরত। ফলে, কোনো শিক্ষক ছুটিতে থাকলে এবং আমাকে অফিসের কাজে কোথাও যেতে হলে বা ব্যস্ত থাকলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হয়। সে কারণে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক দ্রুত নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক জানান, বদলি ও অবসরজনিত কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একজন সহকারী শিক্ষক যখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকেন তখন অনেক সহকারী শিক্ষক মনস্তাত্ত্বিকভাবে তাকে মেনে নেন না। ফলে, নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়।

অবিভাবকেরা জানান, সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে স্কুলগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকার বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসর ও বদলিজনিত কারণে যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, সেইসব পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে উপজেলার যেসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নেই, তা পূরণ হবে।

আশা করছি, এরপর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।

#স্কুল #শিক্ষক