কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারা তলার দ্বিতলবিশিষ্ট একটি ভবন ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ক্লাব হিসেবে ব্যবহার করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ। তবে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর গাফিলতিতে ক্লাবটির গত ১৯ মাসের ভাড়া বকেয়া রয়েছে।
ভাড়া পরিশোধের জন্য মালিক পক্ষ থেকে গত ৫ মাসে তিন দফায় চিঠি দেয়া হলেও ভাড়া পরিশোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি প্রশাসন। উল্টো ভাড়া চুক্তির মূল ফাইল হারিয়ে ভাড়া পরিশোধে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১ ডিসেম্বর তিন বছরের জন্য মালিক পক্ষের সঙ্গে ক্লাবের ভাড়া চুক্তি নবায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে মাসিক ভাড়া নির্ধারণ হয় ৩৬ হাজার টাকা।
চুক্তি অনুযায়ী মাসে মাসে ভাড়া পরিশোধের নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। চুক্তি নবায়নের পর সর্বশেষ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর একসাথে ৯ মাসের ভাড়া পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর আর কোনো ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি। দীর্ঘদিন ভাড়া পরিশোধ না করায় গত ৫ ডিসেম্বর ভাড়া পরিশোধ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর চিঠি দেয় মালিক পক্ষ।
এদিকে এস্টেট অফিস থেকে ভাড়া চুক্তির মূল ফাইলটি হারিয়ে গেছে। ফলে মূল ফাইল না থাকায় চিঠি পাওয়ার পর মালিক পক্ষ থেকে চুক্তিপত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করে এস্টেট অফিস।
ফটোকপি ও চিঠিটি সংযুক্ত করে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধের জন্য বিল অনুমোদন চেয়ে অর্থ ও হিসাব শাখায় আরেকটি ফাইল পাঠানো হয়। কিন্তু মূল ফাইল না থাকায় প্রায় চার মাস হিসাব শাখায় পড়ে থাকে ফাইলটি।
সর্বশেষ গত ৫ মে মালিক পক্ষ ৩য় দফায় চিঠি দেওয়ার পর ফাইলের খোঁজ নিলেও ফাইলটি খুঁজে বের করতে সময় লেগেছে বেশ কয়েকদিন।
এবিষয়ে এস্টেট অফিসের প্রধান আলাউদ্দিন বলেন, ‘মূল ফাইল না থাকায় মালিকপক্ষ থেকে কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে নতুন ফাইল তৈরি করে হিসাব শাখায় পাঠিয়েছিলাম।
তবে মূল ফাইল না থাকায় একটু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। মাঝখানে ওই ফাইলটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে খুঁজে পাওয়া গেছে। নতুন যে মাসগুলো অতিবাহিত হয়েছে সেগুলো যুক্ত করে দুয়েকদিনের মধ্যে পুনরায় হিসাব শাখায় পাঠাবো।’ তবে এই কথা বলার দুই সপ্তাহ পেরুলেও ফাইলটি একই অবস্থায় হিসাব শাখায় রয়েছে।
ফাইল হারানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি ৫ আগস্টের পর। তার আগেই ফাইলটি হারিয়েছে। আগে দায়িত্ব পালনকারী লোকদের গাফিলতির ফলে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আর দায়িত্ব শেষে আগের প্রধান কিছু বুঝিয়েও দেননি।
তবে দায় অস্বীকার করে সাবেক এস্টেট প্রধান শামসুল ইসলাম বলেন, ফাইল তো থাকার কথা, হারাবে কেন? আগে আমরা ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করেছি কোনো সমস্যা হয়নি। গায়ের জোরে একটা কথা বললেই তো হয় না। তারাই তো আমার থেকে বুঝে নেয়নি।
উল্টো আমি যখন রিজাইন করলাম তখন আমাকে ওখানে বসার জায়গাও দিলো না। তাহলে আমি নিজে থেকে বুঝিয়ে দিতে যাবো কেন? আর আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন আমাদেরও কেউ বুঝিয়ে দেয়নি।