রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (৯ মে) বিষয়টি জানা যায়। বৃহস্পতিবার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।এদিন আদালতে তার দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার ট্যুরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক মো. শাহিনুর রহমান।
রিমান্ডে নেয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ৭ মে রাতে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকার একটি মেস থেকে পুলিশের পোশাকে তাকে আটক করা হয় বলে জানা যায়। ঘটনার পরপরই পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশপাশের থানায় খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। পরে আজ বিষয়টি জানা যায় একাধিক সূত্র থেকে।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছর ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এবং সংগঠনটির পক্ষে প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।
কাউন্টার টেরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের রিমান্ড আবেদন সূত্রে জানা যায়, ‘Come Out for Save Gaza’ ও ‘Protest Rally’ নামের কর্মসূচির প্রচার চালান, যা সহিংসতা উস্কে দেয়ার উদ্দেশ্যে সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (টেকনো) ও ল্যাপটপ (লেনোভো) জব্দ করে বলে জানিয়েছে, যেখানে উগ্রপন্থি ও রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্টের প্রমাণ পাওয়া গেছে।এতে আরো উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতার আসামি প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে হিজবুত তাহারীর সংগঠনের সাথে জড়িত মর্মে জানান। আসামি মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।
অভিযুক্ত মিজানুরের বড় ভাই সাজু রহমান বলেন, ওকে সেদিন রাত ১১টার দিকে নারিন্দার মেস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন দিন কোনো খোঁজ পাইনি। পরে জানতে পারি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। আমরা তার ন্যায়বিচার চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, প্রথমে তার অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। পরে জানতে পারি, তাকে রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
মামলার বিষয় জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈনু বলেন, মামলাটি আমি আসার আগে হয়েছে। মামলাটি ধানমন্ডি থানায় নথিভুক্ত হলেও এর তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এ বিষয়ে তারা আমার থেকে ভালো বলতে পারবে।