জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক ড. লাইসা আহমেদ লিসা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষক।
সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম সিন্ডিকেট সভার আমন্ত্রণে তিনি উপস্থিত হন। সভা শেষে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্যের নিকট তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী, সিন্ডিকেট সদস্য থাকবেন ১৬ জন। উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারসহ সরকার মনোনীত ন্যূনতম দুজন যুগ্ম সচিব, সরকার মনোনীত শিক্ষা ও গবেষণা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হতে দুজন, ইউজিসি থেকে একজন, আচার্য মনোনীত দুজন শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন থেকে তিনজন ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে তিনজন সিন্ডিকেট সদস্য হবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সোমবারের সিন্ডিকেট সভায় আমন্ত্রণ পান উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সানজিদা ফারহানা, লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন ও আইন অনুষদের ডিন খ্রিস্টিন রিচার্ডসন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. মোশাররফ হোসেন, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মনিরুজ্জামান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইসা আহমেদ লিসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন, জবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. রইছ উদ্দিন, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদসহ সরকার মনোনীত দুজন যুগ্ম সচিব।
এদিন সিন্ডিকেট চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ‘জবি ঐক্য’র নেতারা তীব্র প্রতিবাদ জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক স্মারকলিপি দেন তারা। একই সঙ্গে জবি ঐক্য থেকে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রনেতারা।
ছাত্রনেতাদের অভিযোগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হলো সিন্ডিকেট। শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাদ দিয়ে নতুন সিন্ডিকেট গঠন করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
এর মধ্যে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে একাডেমিক সভায় অশালীন ভাষা ব্যবহার করে সহকর্মী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এ. কে. এম. মনিরুজ্জামান ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগসমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সমর্থনে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হওয়ায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন।