বিশ্বের সর্ববৃহৎ টেক জায়ান্ট কোম্পানি গুগলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রী রিচিতা খন্দকার রিফাত। গত ১২ জুন গুগলের তাইওয়ান অফিসে যোগ দেওয়ার অফার পান রিচিতা। আগামী ১৮ আগস্ট যোগদানের কথা রয়েছে তার।
শনিবার (১৪ জুন) রাতে তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিচিতা খন্দকার রিফাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ স্যামসাং আইআইটি ইনস্টিটিউটে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জানা গেছে, রিচিতার বাড়ি দিনাজপুরের সদর উপজেলার কালিতলা গ্রামে। তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক এবং ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। ছোটবেলা থেকে তার অভ্যাস ছিল বিভিন্ন কনটেস্টে অংশগ্রহণ করা এবং কোডিং বা প্রোগ্রামিং নিয়ে জানার আগ্রহ।
গুগলে চাকরির অফার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রিচিতা বলেন, অনুভূতি আসলে ভালো। ডেফিনেটলি একটু ভাবছিলাম বিষয়টি নিয়ে। ফাইনালি এটা হয়ে গেলো। সত্যিই ভালো লাগছে। নিউজটা পাওয়ার পর এতো মানুষ অভিনন্দন জানাইছে কি বলবো। আমি আসলে অনেক খুশি।
গুগলে চাকরির অফার পাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি আসলে সেভাবে প্রস্তুতি নেয়নি। এর আগে আমি কয়েকটি প্রোগ্রামে কনটেস্ট করেছি—তাই সেই অভিজ্ঞতাগুলোই কাজে লেগেছে। আমি পরীক্ষার আগে শুধু দেখে গেছি কীভাবে পরীক্ষাটা হয় কি কি প্রশ্ন আসে, কীভাবে কথা বলতে হয় এগুলো। এর বাইরে আসলে সেরকম কিছু দেখা হয়নি।
প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন আসলে সারা বিশ্বেই জবের একটু খারাপ সময় যাচ্ছে। আর দেশের বাইরে জব পাওয়ার রেশিও টাও কমে গেছে। তাছাড়া প্রশ্নগুলো আগের থেকে একটু হার্ড হয়। আমি টেনশনে ছিলাম ভাইভাতে ডাকবে কিনা, কি হয় না হয়। তবে কনফিডেন্স ছিলো। এটাকে মূলত প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বলা যায় না। এছাড়া তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা আসেনি।
চাকরিতে যোগদানের তারিখ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত দুই তিন দিন হলো অফার পেয়েছি। আর জয়েন ১৮ আগস্টের কথা বলেছে। তবে কাগজপত্রের ব্যাপারে তো একটু সময় লাগবে। সেজন্য একটু পেছাতেও পারে জয়েনিং ডেট।
এর আগে, তিনি আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার পান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। স্কুল কলেজ লাইফে অলিম্পিয়াড করেছি। সেই জায়গায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার আছে। ক্যাম্প করেছি। এছাড়া ভার্সিটিতে আসার পর কনটেস্ট করেছি। সেখানে পুরস্কার আছে। আমি যে টিমে ছিলাম সেই টিম চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল। আইসিপিসিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এছাড়াও বিভিন্ন কনটেস্টে বাংলাদেশ র্যাংকিং কিছু পুরস্কার ছিল।
অনুজদের উদ্দেশে তিনি বলেন, একটা কথাই বলবো, সেটা হলো শেখার কোনো বিকল্প নেই। যে স্টেজে আছো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সেখান থেকে যতটুকু শেখা যায় শিখে নাও, জেনে নাও। কোনো কিছু যেন বাদ না থাকে। পরবর্তীতে আশা করি কাজে লাগবে।