ছবি : সংগৃহীত
বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে একটি পৃথক ‘বিচার বিভাগীয় সচিবালয়’ গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন বিচারকরা। ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পৃথক সচিবালয়ের ভূমিকা’ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি জানান।
শনিবার (১২ জুলাই) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজশাহীর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার মিলনায়তনে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান। অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকরা অংশ নেন।
সভার শুরুতে বিচারকরা ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তাদের আত্মত্যাগ গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রতীক হিসেবে স্মরণ করা হয়।
বক্তারা উল্লেখ করেন, এই আত্মত্যাগ শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক অবিস্মরণীয় অংশ। বিচারকগণ ব্রিটিশ আইনজ্ঞ এ.ভি. ডাইসির আইনের শাসনের তিনটি মূল স্তম্ভ আইনের প্রাধান্য, আইনের দৃষ্টিতে সমতা এবং বিচারিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, আইনের শাসন মানে রাষ্ট্র মানুষের খেয়াল-খুশি বা ইচ্ছার দ্বারা নয়, বরং আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সক্ষমতা ও স্বাধীনতা এখনো নির্বাহী বিভাগের উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। বিচারকদের পদ বৃদ্ধি, পদ-সৃজন এবং আদালতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে থাকায় বিচারিক কর্মঘন্টার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
ছবি : সংগৃহীত
উপস্থিত বিচারকরা জোর দিয়ে বলেন, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথককরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার রায়ে হাইকোর্ট বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার নির্দেশনা দেন, যা আপিল বিভাগ ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে বহাল রাখেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে ১ নভেম্বর বিচার বিভাগকে পৃথক ঘোষণা করা হলেও রায়ের ১২ দফার মধ্যে একটি মাত্র দফা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়েছে। বিচার বিভাগের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, পৃথক সচিবালয় এবং বিচারকদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়গুলো এখনো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।