পর্দা টানিয়ে চলে মাধ্যমিকের ক্লাস | স্কুল নিউজ

পর্দা টানিয়ে চলে মাধ্যমিকের ক্লাস

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফানেও পাঠদান দিতে হয় আধা পাকা টিনশেড ঘরে। যে ঘরে নেই কোনো জানালা-দরজা।

#সরকারি স্কুল #শিক্ষার্থী

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফানেও পাঠদান দিতে হয় আধা পাকা টিনশেড ঘরে। যে ঘরে নেই কোনো জানালা-দরজা। পর্দা টানিয়ে চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কর্মসূচি। তবে বৃষ্টি নামলেই বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। কারণ বৃৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় বই, খাতাসহ তারা নিজেরাও।

এমন চিত্র দেখা গেছে, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রতিদিনই এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের ক্লাস চলেছে।

শুধু পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় নয়। রোববার (২২ জুন) সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের সি আর এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়েও একই চিত্রের দেখা মেলে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় নির্মিত টিনশেড ঘরে চলছে পাঠদান। শ্রেণিকক্ষের টিনের চালে ফুটো, ভাঙা টিনের বেড়া। বৃষ্টি নামলেই শ্রেণিকক্ষে ঢুকে যায় পানি। কখনও পার্শ্ববর্তী হাজরা তলা মন্দিরের বারান্দায় করানো হয় পাঠদান।

মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র দীপ বিশ্বাস বলেন, আমাদের বিদ্যালয় ভবনে জানালা-দরজা নেই। বৃষ্টি নামলে বই খাতা ভিজে যায়। ঝড় বাতাস উঠলে আমরা আতঙ্কে থাকি। আমরা ক্লাসে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারি না।

আরেক শিক্ষার্থী বলে, কাপড়ের পর্দা দিয়ে আমাদের রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা করা যায় না। কাপড় ভিজে পানি ঘরে চলে আসে। যখন মেঘ ঢাকে তখন ভয়ে আমাদের বুক কেঁপে উঠে। আমাদের বন্ধুরা ভাল জায়গায় পড়ে তাদের বিদ্যালয়ে চার তলা ভবন রয়েছে। কিন্তু আমাদের নাই, এতে আমাদের মন খারাপ হয়।

বিদ্যালয় এমন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানকে পড়তে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকেরা। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের ভবনগুলো সংস্কার করা হচ্ছে না।

সবুজ দাস নামে এক অভিভাবক বলেন, বর্ষাকালে ঝড়, বৃষ্টিতে আতঙ্কে থাকি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।

মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকা সত্ত্বেও শ্রেণি কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে পারছি না। কারণ আমাদের ভবনগুলো জরাজীর্ণ। এখানে পরিপূর্ণভাবে ক্লাস করার পরিবেশ বিদ্যমান নেই। যদি ভবনগুলো সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সুষ্ঠু পরিবেশে আমরা শিক্ষাদান করতে পারব। ভবন না থাকার কারণে আধুনিক যুগে ডিজিটাল ক্লাস নিতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি উপজেলার যে চারতলা ভবনগুলো হচ্ছে, আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য একটি ভবন দেওয়ার সুব্যবস্থা করবেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নড়াইল জেলায় বেশ কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ হয়ে আছে। বিশেষ করে মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। বিদ্যালয়টিতে পর্দা দিয়ে ক্লাস করানো হয়। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে এগুলোর নাম দিয়েছি। শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এসব বিদ্যালয়ে বরাদ্দের কোনো খবর এখনও পাইনি। বিদ্যালয়গুলো সংস্কারের জন্য স্থানীয় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

#সরকারি স্কুল #শিক্ষার্থী