গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় চম্পা আক্তার (১৪) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের দাবি, বিয়ের প্রলোভনে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন তার প্রেমিক শাকিল মিয়া (২০)। পরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় চম্পা আক্তার আত্মহত্যা করে।
গত সোমবার (১৬ জুন) রাতে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নে তালুক সর্বানন্দ গ্রামের নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রীকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চম্পা আক্তার ওই গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে। খাজেমুল ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
মৃত্যুর আগে এক ভিডিওবার্তায় চম্পা আক্তার বলেন, ‘শাকিল আমাকে বিয়ে করবে বলে ওর বোনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। বিষয়টি শাকিলের পরিবারও জানে। তারাও বলছে, তুই মরদে গিয়ে।’
এ ঘটনায় সোমবার (১৬ জুন) নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনজল গ্রামের হাছেন আলীর ছেলে শাকিল মিয়ার (২০) সঙ্গে চম্পা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক বছর থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চম্পার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন শাকিল।
সম্প্রতি তারা দুইজন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আসেন। বিষয়টি উভয়ের পরিবার জানতো। এক পর্যায়ে চম্পা আক্তার বিয়ের জন্য শাকিলকে বলে। শাকিল বিয়েতে রাজি না হয়ে তাকে আত্মহত্যা করার জন্য বলেন। এর কিছুদিন পর শাকিলের আত্মীয় সর্বানন্দ গ্রামের সোনা মিয়া চম্পাকে কীটনাশকও এনে দেন।
এরপর গত ১৫ মে পরিবারের অজান্তে চম্পা আক্তার ওই কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে গত সোমবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায় সে।
চম্পার পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের সম্পর্কের বিষয়টি শাকিলের পরিবার জানতো এবং বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। তবে চম্পাকে বাড়ির বউ করতে রাজি হয়নি শাকিলের পরিবার।
এ কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল চম্পা। শাকিল মিয়ার প্ররোচনায় চম্পা আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।