অভিযুক্ত মো. আবদুল আলী। ছবি : দৈনিক শিক্ষাডটকম
ছুটি বা বিদেশযাত্রার অনুমতি না নিয়েই সৌদি আরবে অবস্থান করছেন ঝিনাইদহের এক মাদরাসা সুপার। তিনি একদিকে হত্যা মামলার পলাতক আসামি, অন্যদিকে হাজিরা খাতায় জাল স্বাক্ষর করে সরকারি কোষাগার থেকে নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন ঘটনা ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সামন্তা সিদ্দিকিয়া দাখিল মাদরাসায়। অভিযুক্ত মো. আবদুল আলী, ওই মাদরাসার সুপার। এ প্রতিবেদন লেখা অবধি তিনি বিদেশেই অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগের পর মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে দুবার তলব করা হলেও মো. আবদুল আলী আসেননি। পরবর্তীতে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে, তবে এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া মেলেনি।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। আমাদের কাছে কিছু অভিযোগ এসেছে। তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি আমি দেইনি, তিনি কীভাবে বিদেশে গেলেন এটাইতো প্রশ্ন। উনি একটি বেসরকারি মাদরাসা সুপার, তাই উনি বিদেশ যেতে আমার অনুমতি দেখাতে হয় না। যার কারণে আমি অনুমতি দেয়ার আগেই উনি চলে গেছেন। উনি সরকারি কর্মকর্তা হলে ওনার এসব কিছু জমা দিয়ে যেতে হতো। আমি যতদূর জানলাম এটার জন্য শুধু প্রাথমিক একটি মামলা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে মতামত পাওয়ার জন্য অফিসার ইনচার্জ ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে চিঠিও লিখেছিলাম, উনি মতামত আসার আগেই চলে গেছেন। আর ওনার অনান্য বিষয়গুলোও আমরা দেখছি।
বিষয়টি নিয়ে মাদরাসার দাতা সদস্যের পক্ষে মো. সামাউল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, মো. আবদুল আলী ছুটি ও অনুমতি ছাড়াই বিদেশে থাকলেও হাজিরা খাতায় সহ-সুপারের সহায়তায় নিয়মিত স্বাক্ষর দেখিয়ে বেতন নিচ্ছেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি হজ কাফেলা পরিচালনা ও ইটভাটার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চার মাসে সৌদিতে অবস্থান করেছেন ৭৮ দিন, অথচ খাতায় তিনি নিয়মিত উপস্থিত দেখানো হয়েছে। এ ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সরকারি নীতিমালার পরিপন্থি, বিশেষ করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য।
২১ মার্চ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলায় ১ নম্বর আসামি হিসেবে এজাহারভুক্ত করা হয়। এরপরও সহ-সুপার মো. তরিকুল ইসলামের মাধ্যমে খাতায় জাল স্বাক্ষর করে অনুপস্থিত দিনগুলোতে হাজিরা দেখানো হয়।
তিনি ছুটি শেষেও যোগদান করেননি, অথচ ৮ মে তার ভাইপোকে সহ-সুপার বানিয়ে খাতায় স্বাক্ষর বসানো হয়। এ ছাড়া ১৭ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত ছুটির সীমা অতিক্রম করে হাজিরা দেখানো হয়েছে, যা নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ২৫ মে-র হাজিরা খাতায় সময় উল্লেখ নেই, এমনকি ২৬ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও হাজিরা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।