৭৫ কোটি টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসী! | ফিচার নিউজ

৭৫ কোটি টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসী!

একজন মানুষের বেতন মাসে কত টাকা হলে সে মোটামুটি খুশি হবেন? ৫,১০ লাখ থেকে ৪০,৫০ লাখ! তাও কম? তাহলে যদি মাসে ৬ কোটি ২৫ লাখ হয়! তাতেও কেউ একজন খুশি নন। কারণ তার এত চাই না আর। তাই চাকরিকে টা টা গুডবাই করে স্ত্রীসহ হয়ে গেলেন সন্ন্যাসী।

একজন মানুষের বেতন মাসে কত টাকা হলে সে মোটামুটি খুশি হবেন? ৫,১০ লাখ থেকে ৪০,৫০ লাখ! তাও কম? তাহলে যদি মাসে ৬ কোটি ২৫ লাখ হয়! তাতেও কেউ একজন খুশি নন। কারণ তার এত চাই না আর।

তাই চাকরিকে টা টা গুডবাই করে স্ত্রীসহ হয়ে গেলেন সন্ন্যাসী। চাকরিটা ইউরোপ আমেরিকার ডলার পাউন্ডের ছিলো না। ছিলো এই উপমহাদেশেই। প্রতিবেশী দেশ ভারতে। তাও ভারতের স্বনামখ্যাত ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানীর কোম্পানীতে।

ছিলেন বিশাল কোম্পানীর মালিকের ডান হাত। বেতন ছিলো ৭৫ কোটি টাকা। সব ছেড়ে আজ করছেন ভিক্ষা! বিশ্বাস হওয়ার মত কথা নিশ্চয় নয়। তবে অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে। ৭৫ কোটির চাকরি ছেড়ে এখন ভিক্ষা করে জীবন চালানো লোকটির নাম প্রকাশ শাহ। তিনি রিলায়েন্স ইন্ডান্ডিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

বছরে যার বেতন ৭৫ কোটি টাকা তার অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কি কি হতে পারে তা সচেতন পাঠক মাত্রই নিশ্চয় আনুমান করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

তবে যা জানা গেছে তা হলো- প্রকাশ শাহ তার বিলাসী জীবন ত্যাগ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন আরো অনেক আগেই। করোনা মহামারির কারণে তারা পরিকল্পনা কিছুটা পিছিয়েছে। করর্পোরেট জীবন ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনেও ফেরতে পারতেন  তিনি। তবে তা না করে সরাসারি বেছে নিলেন সন্ন্যাস জীবন। এখন খালি পায়ে হাঁটেন। গায়ে পড়েন সাদা পোশাক। সাধুর জীবন তাঁর।

প্রকাশ শাহের জীবন কাহিনী সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক! কারণ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ গ্রাজুয়েশন পাস করে আইআইটি বোম্বে থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি।

কর্মজীবনের শুরু থেকেই প্রকাশ শাহ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী। এই দক্ষতাই তাকে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রজেক্ট ডিভিশনের শীর্ষ পদে তুলে নেয়।

জানা যাচ্ছে, জামনগরের পেটকোক গ্যাসিফিকেশন প্রজেক্ট থেকে শুরু করে পেটকোক মার্কেটিং, সব কিছুতেই প্রকাশের বিকল্প ছিলো না আম্বানীর হাতে।  তবে জীবনের শিখরে পৌঁছেও প্রকাশ শাহ যেন জীবনের আসল মজা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তাই মহাবীর জয়ন্তীর দিন তিনি ও তাঁর স্ত্রী সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। যেন ভোগকে ত্যাগ করে তিনি জীবনের মানে খুঁজে পেলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অনেক আগেই তিনি দীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে করোনা মহামারীর কারণে পরিকল্পনা পিছিয়ে যায়। আর এখন তিনি কোনও যানবাহনে চলেন না। বরং খালি পায়ে হেঁটে ভিক্ষা করেই জীবনযাপন করেন।

বেশ কয়েকটি সূত্র খতিয়ে জানা গেল, প্রকাশ শাহের বর্তমানে দুই পুত্র রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই সন্ন্যাস গ্রহণ করেছেন। আর অন্যজন বিবাহিত। তারও এক সন্তান রয়েছে ঘরে। এক কথায় ৭৫ কোটি টাকার বিলাসবহুল চাকরি ছেড়ে সন্ন্যাসী হয়ে ধর্মের পথে পা বাড়ানোর মতো দুঃসাহস সত্যিই গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো ঘটনা।