ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেছেন, একটু খোঁজ নিলে দেখতে পাবেন, অনেকেই পিএইচডি বেশিদিন হয়নি শেষ করেছে। পিএইচডি শেষে তার উচিত পড়ানো এবং একই সঙ্গে গবেষণার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গবেষণা করা।
কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষক একবার পিএইচডি করতে পারলে মনে করে মঞ্জিল-এ মকসুদ পুরা হয়ে গেছে। নামের আগে ড. অলংকার বসিয়ে দিয়ে চুটিয়ে রাজনীতি বা অন্য কোনো ধান্দাবাজিতে যুক্ত হয়ে যান। তারপর একবার অধ্যাপক হতে পারলে ওটা কনফার্ম করে মোটামোটি অবসর যাওয়ার মত জীবন-যাপন করে।
গতকাল শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মামুন বলেন, যারা ভিসি হয় তাদের একটা বড় অংশই দেখবেন খুব অল্প বয়সের। কি অপচয়। ভালো পিএইচডি করেছে। ঠিক যখন ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়ার জন্য প্রস্তুত তখনই বেলুন ফুটা হওয়ার মত গবেষণা ও শিক্ষকতায় চুপসে যায়। শুরু হয় প্রশানিক পদের মত ‘আনপ্রডাক্টিভ’ পদ পাওয়ার প্রতিযোগিতা।
অধ্যাপক মামুন আরো বলেন, দেশে ৫০টি যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকে তাহলে সেখানে প্রশাসনিক পদ হলো ৫০টি ভিসি পদ+অন্তত ৫০টি প্রোভিসি পদ (কোনো কোনোটিতে একাধিক)+৫০টি কোষাধক্ষ্য।
তারপর আছে ইউজিসি ও পিএসসি মিলিয়ে অন্তত ১২টি পদ। এইরকম হিসাব করলে ২০০টি পদ খুঁজে পাওয়া যাবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশে আরও ১০০টির মত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সেখানেও অনেক শিক্ষক প্রশাসনিক কাজে যুক্ত হয়ে যান।
এইসব পদে আমরা আশাকরি খুব ভালো একাডেমিসিয়ান অর্থাৎ গবেষকরা নিয়োগ পাক। যদি তাই হয় তাহলে দেশে পড়ানোর জন্য, গবেষণার জন্য কতজন গবেষক বাকি রইলো? যারা বাকি রইল তাদের একটা বড় অংশ কোনো রকমে একটা পিএইচডি ডিগ্রি শেষে একটা প্রশাসনিক পদ পেতে গবেষণার চেয়ে রাজনীতিতে বেশি যুক্ত থাকে।
তার ওপর অনেকেই প্রভোস্ট হয়ে ‘‘আনপ্রডাক্টিভ’’ কাজে যুক্ত আরো অনেকেই। তাহলে গবেষণা ও ভালো পড়ানোর জন্য রইলো বাকি কতজন শিক্ষক?ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে ভিসি হওয়া মানে হলো মোট কাজের ৮০ শতাংশই হলো অকাজ, যে কাজ পৃথিবীর ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্তিত্ব নেই।
যেমন, দিবসের একটা অংশ যায় উদ্বোধন করতে, একটা বড় অংশ যায় বিভিন্ন গ্রুপের নানা পদ বা প্রমোশনের তদবির শুনতে, ঝগড়া বা মারামারি ও কোন্দল মেটাতে, ছাত্র-ছাত্রীদের নানা অযৌক্তিক দাবি শুনতে ও সেগুলো মিটিগেশন করতে, হাজার খানেক স্বাক্ষর করতে ইত্যাদি। এত অকাজ পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে করতে হয় না।
অধ্যাপক মামুন বলেন, এইবার আশা করেছিলাম এই ৮০ শতাংশ অকাজকে কমিয়ে সেই বাঁচানো সময়কে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর পেছনে ব্যয় হবে। আমার সব আশা বৃথা। কিছুই পরিবর্তন হয়নি। পরিবর্তনের আশাও শূন্য। ভবিষ্যতে হবে সেই আশা একদম শূন্য।
অথচ কত ভালো কাজ করার আছে।
এইগুলো করতে হলে যেই দৃঢ়তা দরকার আমাদের ভিসিদের সেই দৃঢ়তা নেই। এইগুলো চ্যালেঞ্জিং। স্টেটাস কোকে পরিবর্তন করতে হলে চ্যালেঞ্জিং পদক্ষেপতো নিতেই হবে। তাই না?শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন।
বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBEকরতে ক্লিক করুন।