পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা | কারিগরি নিউজ

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতি মামলার রায় স্থগিতের শুনানি নিয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।

#কারিগরি #শিক্ষার্থী #শিক্ষক #ছাত্র আন্দোলন

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতি মামলার রায় স্থগিতের শুনানি নিয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সব কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আগামীকাল ১৮ মে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ দেশের কারিগরি শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় একটি অরাজনৈতিক ও অগ্রণী ছাত্র সংগঠন। সংগঠনটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কারিগরি ছাত্র সমাজকে অবহিত করতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

এক ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতি মামলার রায় বাতিলের দাবিতে ১৮ মে সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে বিক্ষোভ কার হবে। কারণ সম্প্রতি হাইকোর্ট কর্তৃক ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলার রায় স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ মে।

কারিগরি ছাত্র সমাজ পূর্বের রায়কে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আমরা কারিগরি ছাত্র সমাজ এই মামলার রায় সম্পূর্ণ বাতিল চাই। আমারা জানি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের মূল কাজ হলো ল্যাব পরিচালনায় সহায়তা এবং প্রাকটিক্যাল ক্লাসে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তারা এসএসসি অথবা এইচএসসি ভোকেশনাল পাস। এই যোগ্যতায় তারা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অক্ষম এবং অযোগ্য। তাই শিক্ষক পদে তাদের পদোন্নতি অযৌক্তিক। তাদের জন্য মন্ত্রণালয় ভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে যে কিভাবে তাদের সিস্টেমে প্রমোশন দেওয়া যায়। তারাও তাদের সিস্টেমে প্রমোশন পাবে এ বিষয়ে সুন্দর পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রমোশন পাওয়ার অধিকার সবার আছে তবে সেটা হতে হবে যৌক্তিক।

আরও বলা হয়, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলছি-জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (শিক্ষক) পদে পদোন্নতির জন্য ভিন্ন কোনো মানদণ্ডে বা বাছাই ছাড়া সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে না। শিক্ষকদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদটি কেবলমাত্র ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিযারিং ডিগ্রিধারীরা (বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) এর মাধ্যমে বাছাইকৃত হয়ে নিয়োগ পায়। যার এই পদে আসতে চায় তারা নির্দিষ্ট যোগ্যতা নিয়ে বিপিএসি এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে আসুক। কোনো স্পেশালভাবে এই পদে কারো পদোন্নতি নিয়ে আসার সুযোগ নাই। আমরা চাই, ১৮ তারিখ হাইকোর্ট এই মামলাটি বাতিল করে দিয়ে কারিগরি শিক্ষার স্বচ্ছতা ও মান রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক।

উক্ত মামলার রায় সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে ১৮ মে সারা দেশে কারিগরি শিক্ষার্থীরা একযোগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করবে।

দুই ৬ দফা বাস্তবায়নের রূপরেখা এবং সাম্প্রতিক অগ্রগতি

ছয় দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ২১ দিন সময় নিয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করেছে, যা ১৩ মে প্রাথমিক খসড়া ছাত্র প্রতিনিধিদের কাছে দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেটি যাচাই-বাছাই করে এবং ছাত্র প্রতিনিধিদেরকেও যাচাই-বাছাই করার জন্য দেওয়া হয়। সেই রাতে ঢাকাস্থ সকল ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা আইডিইবিতে জরুরি মিটিং করি এবং পরদিন ১৪ মে বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। প্রাথমিক রূপরেখায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবির অনুপস্থিতির কারণে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রধান কার্যনির্বাহী উপদেষ্টা রহমত উল আলম শিহাব তাতে স্বাক্ষর করেননি।

পরবর্তীতে সকল প্রতিনিধির মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি সংযোজন করে ১৫ মে কমিটির সকল সদস্য হতে স্বাক্ষরিত হয়ে পত্রটি শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার নিকট পাঠানো হয়েছে।

রূপরেখায় যে বিষয়গুলো পরবর্তী সংশোধনে গুরুত্ব পেয়েছে:

>> ভর্তি পরীক্ষার পরিকল্পনা

>> ডিপ্লোমা শিক্ষা ইংরেজি ভার্সনে রূপান্তর

>> বেসরকারি খাতে ন্যূনতম ১০ম গ্রেড ভিত্তিক বেসিক বেতন প্রদান ইস্যু

>> বেসরকারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট ভাতা প্রদান

>> কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিদের ইস্যু

অন্যান্য যেসব বিষয় সরাসরি পত্রে উল্লেখ হয়নি, সেগুলো শিক্ষা বিভাগীয় সচিব নিজে নোট করে নিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, বর্তমান শিক্ষক পদবিগুলো-যেমন জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর, ইন্সট্রাক্টর, চিফ ইন্সট্রাক্টর ইত্যাদি পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এসব পদবিকে আধুনিক ও মর্যাদাপূর্ণ করতে সহকারী প্রভাষক, প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক প্রভৃতি নতুন প্যাটার্নে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন করতে কাজ করবেন।

ছয় দফা বাস্তবায়নের চূড়ান্ত রূপরেখা এই সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। সচিব মহোদয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, এই রূপরেখা প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদি এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, তাহলে রূপরেখাটি প্রকাশে কিছুটা সময় নিতে পারে; তবে তা দীর্ঘ হবে না। যেদিন রূপরেখাটি প্রকাশিত হবে সেদিন সবাই বিস্তারিত জানতে পারবেন। সবাইকে আমরা আশ্বস্ত করছি, উক্ত রূপরেখাটিতে ভালো কিছু হবে। যেহেতু এখনো প্রকাশিত হয়নি তাই আমরা বিস্তারিতভাবে সব বলতে পারছি না। তবে এটুকু বলে রাখছি- ছাত্র প্রতিনিধি কর্তৃক কিছু বিষয় সংযোজন করার পর উক্ত রূপরেখাটির গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে গিয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, বেসরকারি পলিটেকনিকসমূহকে এমপিওভুক্ত করা এবং কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবি। যদিও এটি রূপরেখা পত্রে সরাসরি আসেনি, কিন্তু মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আশা করব এই বিষয় মন্ত্রণালয় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পুনরা রাজপথে নামা থেকে বিরত রাখবে।

এছাড়াও, আমরা জোরালোভাবে চাই, উন্নত বিশ্বের আদলে একটি পূর্ণাঙ্গ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত প্রতিষ্ঠা হোক। ইতোমধ্যে ঘোষণা অনুযায়ী ২০২৬-২৭ সেশন থেকে দুটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ চালু হবে, যেখানে ১০০% ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে এবং এর পরবর্তী ২০২৭-২৮ সেশন থেকে দুটি ইঞ্জিনিযারিং কলেজ চালু হবে এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক অগ্রগতি।

#কারিগরি #শিক্ষার্থী #শিক্ষক #ছাত্র আন্দোলন