জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘খুনি হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আগামীতে যারা এই বিচারের আগে নির্বাচনের পাঁয়তারা করবে, আমরা তাদের জাতীয় শত্রু ও বেঈমান হিসেবে ধরে নেব।’
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গত ৫৩ বছরের ফ্যাসিস্ট রাজনীতি ও ’২৪-এর খুনের বিচারবিহীন কোনো দল যদি বাংলাদেশে থেকে যেতে চায়, তাদের আমরা ওয়াশআউট করব, দেশ থেকে বিতাড়িত করব।
বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়। আগে বিচার, পরে নির্বাচন।’
নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
আমরা যখন দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সামনে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করে যাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদ ও দিল্লির এক্সটেনশন গত ৫৩ বছরে মুজিববাদী, ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের মানুষের গুম-খুনের জন্য দায়ী ছিল, ’৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের জন্য দায়ী ছিল। ’৭১ খ্রিষ্টাব্দের পরে বাংলাদেশকে একটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য দায়ী ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের তরুণ যুবক সমাজ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে দেখিয়ে দিয়েছে যুবকরা কখনো ঘুমাতে পারে না।
আগামীতে বাংলাদেশে যত আক্রমণ আসুক যুবকরা রক্ত দিয়ে সব আক্রমণ প্রতিহত করব।’
বাংলাদেশের সামনে দুটি শত্রু আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি হচ্ছে দিল্লির এক্সটেনশন মুজিববাদী শত্রু এবং অপরটি দিল্লির হিন্দুত্ববাদী শত্রু। এই দুই শত্রুকে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। ঢাকাকে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের দুই হাজার শহীদের খুনের দায়ে শেখ হাসিনাকে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
একই সঙ্গে আজকে আমরা শপথ নিতে চাই, আগামীতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে পনুঃগঠন হতে দেব না। মুজিববাদ পুনর্বাসন হতে দেব না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে পুনর্বাসন হতে দেব না। বাংলাদেশে আর কোনো বিদেশি তাঁবেদারি প্রতিষ্ঠা করতে দেব না। আজ থেকে আমরা আমাদের তরুণ যুবাদের রক্ত উৎসর্গ করলাম।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, তার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছিল, দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করেছে। এই মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা বাংলাদেশকে দিল্লির দালাল বানিয়েছে। দেশের মানুষকে নাগরিক হয়ে উঠতে দেয়নি। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ আগস্টের পর দেশের মানুষের নাগরিক হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
এর আগে বিকেল ৩.৪০ মিনিটে বিজয় র্যালিটি শুরু হয়। বাংলামোটর মোড় থেকে শুরু করে শাহবাগ মোড়, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশীর মোড়, টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে র্যালি শেষ হয়। র্যালিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করা হয়েছে।
র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক আলী নাসির খান, যুগ্ম সংগঠক এসএম সাহারিয়ার, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।