ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসবে না ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এ কথা বলেছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএকে আরাঘচি জানান, ‘আমেরিকানরা আলোচনা চায়। বেশ কয়েকবার বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে, ‘আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া’ পর্যন্ত আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এই অপরাধের অংশীদার হওয়ায় আমেরিকার সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা নেই।’ খবর-বিবিসি
গত সপ্তাহে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসছেন আরাঘচি। আজ শুক্রবার জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়ার কথা রয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত সাত দিন পেরিয়ে আজ শুক্রবার অষ্টম দিনে পড়লো। শেষ পর্যন্ত এই সংঘাত কোন জায়গায় গিয়ে ঠেকবে, তা এখনো নিশ্চিতভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এই ইস্যুতেই আজ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হবে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জেনেভা সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ফ্রান্স ও জার্মানির পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাসেরও এই বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে গত এক সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর এটিই হবে ইরান ও পশ্চিমা নেতাদের মধ্যে প্রথম সরাসরি আলোচনা। আশা করা হচ্ছে, বৈঠকে ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরানোর বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেন, এই আলোচনার লক্ষ্য ‘ইরানকে পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে স্থায়ীভাবে পিছিয়ে আনা।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ল্যামি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ভয়াবহ পরিস্থিতি থামানোর সময় এখনই এবং কারও জন্যই সুফল বয়ে না আনা ওই অঞ্চলজুড়ে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রতিরোধ করারও উপযুক্ত সময় এটি।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ডেভিড ল্যামির এক বৈঠকে দুইজনই একমত হন যে, ‘ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা অর্জন করতে পারবে না।’ ওই বৈঠক ল্যামি মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, তারা ‘দীর্ঘমেয়াদে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুর সমাধান’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার মতে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এর একটি কূটনৈতিক সমাধান হতে পারে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হবে কি না- এই বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। হোয়াইট হাউজের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই বার্তা জানান তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বা নাও হতে পারে; তার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়টির ওপর ভিত্তি করে আমি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব; যে আমি যাব কিনা।’
এর আগে বিবিসিসহ মার্কিন গণমাধ্যমে খবর এসেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেননি।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এ খবর অস্বীকার করেন। ট্রাম্প কী করবেন, তা জনসমক্ষে স্পষ্ট করে বলেননি। তবে বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এটা করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে চাই। তবে এতটুকু বলতে পারি, ইরান বড় সমস্যায় আছে এবং আলোচনায় ফিরতে চায়।’
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।