‘বিএনপি ছাড়াও ৫২টি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়’ | বিবিধ নিউজ

‘বিএনপি ছাড়াও ৫২টি রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য এ দাবি করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

#বিএনপি

শুধু বিএনপি নয়, দেশের ৫২টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরেই সংসদ নির্বাচন চায়’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ীকমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

আজ সোমবার (১ জুন) দুপুরে এক আলোচনা সভায় জাপানের নিক্কেই এশিয়া ফোরামে প্রশ্ন-উত্তরপর্বে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য এ দাবি করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলেছি, নির্বাচন ডিসেম্বরে হলে নির্বাচন কমিশনের সুবিধা, সরকারেরও সুবিধা, জনগণেরও সুবিধা। সেটা আমরা যুক্তি দেখিয়েছি। যদি অন্যকোনো যুক্তি থাকে সরকার পরিষ্কার করুক। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুক।

সেটা ছিল তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব। তা না বলে বিদেশে গিয়ে বলেছেন, শুধু বিএনপি নির্বাচন চায়। এটা সঠিক না। আপনারা আজকে পত্রপত্রিকায় দেখেছেন। জাতীয় পত্রিকায় লেখা হয়েছে ৫২টি দল একত্রিত হয়ে নির্বাচন ডিসেম্বরে চায় এবং সেই দলগুলোর নাম, নেতাদের নাম, তাদের বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘এখন যদি প্রশ্ন উঠে, আপনার (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস) ওপরে যেখানে আমাদের এত বড় বিশ্বাস আপনি কেন বাংলাদেশের জনগণকে বা বিদেশের নাগরিককে ভুল পথে পরিচালিত করবেন। কেনইবা আমাদের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন।

আমরা এখনও আশা করি, তিনি এ কথা উপলব্ধি করবেন। উপদেষ্টারা যারা অতিরিক্ত কথা বলেন, তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা বিতর্কিত। আমরা সেটাও দাবি করেছি, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে যদি একটি ছোট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন, তাদের পক্ষেই সেই জাতীয় নির্বাচনটা অনুষ্ঠান করা সুন্দর হবে।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল দ্বিতীয় দফা বৈঠক ডেকেছেন। আমরা ‍যাব। গেলেও আমরা কী বলব? আমরা তো আগেই সংস্কার কর্মসূচি দিয়ে রেখেছি। অনেক সংস্কার কর্মসূচি তাদের প্রস্তাবের সঙ্গে মিলে।

আমরা মনে করি, মিনিমাম সব দল একমত হবে সেটাকে ঐকমত্য ঘোষণা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। বাংলাদেশে যে সংকট নির্বাচনকে নিয়ে। এখানে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা আপনারা জানেন অত্যন্ত সম্মনিত ব্যক্তি। যিনি এনজিও করে দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছেন এবং তিনি একটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

বাংলাদেশে কিন্তু আর কেউ নাই। আমরা অনেকে বিশ্বাস নিয়ে এ দেশের জনগণ অনেক বিশ্বাস নিয়ে যে বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিয়েছে এবং আমরা যারা নেতৃত্ব দিয়েছি আমরা অনেক বিশ্বাস করে উনাকে এই পদে (প্রধান উপদেষ্টা) বসিয়েছি।’

খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘বিএনপিই কি নির্বাচন চায়? আমি বলছি, কে নির্বাচন চায় না? নির্বাচন সবাই চায়। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে পতিত স্বৈরাচাররা ষড়যন্ত্র করবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রয়োজন। আপনারা যে বলছেন জুনে নির্বাচন দেবেন।

এর আগে দিলে কী হয়? ডিসেম্বরের পর জানুয়ারি মাসে, এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা—এই রোজাকে তো আমরা পিছিয়ে দিতে পারব না। এই রোজা ও ঈদ নিয়ে দুই মাস চলে ‍যায় ফেব্রুয়ারি-মার্চ। তারপর আসবে এপ্রিল-মে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এগুলো পেছানোর সুযোগ নেই।

এসব পাবলিক পরীক্ষায় যেসব স্কুল-কলেজে সেন্টার হয় সেগুলোতে কিন্তু ভোটের সেন্টার হয়। সরকার এপ্রিল-মে মাসে নির্বাচন করতেই পারবে না। আর জুন মাসে পুরোপুরি বর্ষাকাল চলে আসে।

এবার তো দেখলাম মে মাসে কী পরিমাণ বৃষ্টি এবং সারা দেশে বর্ষা অবস্থা। জুন মাসে নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আমরা মনে করি ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব এবং আমরা দাবি করছি, আপনি ডিসেম্বরের মধ্যে যেদিন সুইটেবল মনে করেন, সেদিনটি আপনারা ঘোষণা করেন।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের আ ন হ আখতার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শামসুল ইসলাম শামস, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সেলিম ভুঁইয়া, জাকির হোসেন।

জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল,অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের এ কে এম মহসিন, রাশেদুল হক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের ফখরুল আলম।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাইফুজ্জামান সান্টু, ডিপ্লোমা অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউল হায়দার পলাশ, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এ কে এম মুসা, ফিজিওথ্যারাপিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তানভীরুল আলম, ইউনানি আয়ুর্বেদিক গ্রাজুয়েট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের মির্জা লুৎফুর রহমান লিটন প্রমুখ।

#বিএনপি