ব্রাইট প্রিন্টিং এর নামে প্রকাশিত সংবাদ সর্বৈব মিথ্যা দাবি প্রতিষ্ঠানের | বই নিউজ

ব্রাইট প্রিন্টিং এর নামে প্রকাশিত সংবাদ সর্বৈব মিথ্যা দাবি প্রতিষ্ঠানের

আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই আমি কখনো নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপিনি। এর প্রমাণ হলো নিম্নমানের কাগজে বই ছাপলে এনসিটিবি কর্তৃক নিযুক্ত ইন্সেপেকশন এজেন্ট মাঠ পর্যায়ের বই সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে ত্রুটি পেলে তাদেরকে তালিকাভুক্ত করে এবং নিম্নমানের বইসহ এনসিটিবিতে জমা দেয়।

#পাঠ্যবই #কাগজ #শোকজ #ছাপাখানা

গত ১লা জুন, ২০২৫ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ১ম পাতায় ‘নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপিয়ে ১৬ বছরে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এস এস মহসিন’ শীর্ষক কাল্পনিক, মিথ্যা ও মানহানিকর প্রতিবেদনের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে।

প্রথমেই জানাতে চাই, কাল্পনিক প্রতিবেদনে উল্লেখিত সিন্ডিকেটের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার জানামতে কোনো সিন্ডিকেট হয়ও না।

আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই আমি কখনো নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছাপিনি। এর প্রমাণ হলো নিম্নমানের কাগজে বই ছাপলে এনসিটিবি কর্তৃক নিযুক্ত ইন্সেপেকশন এজেন্ট মাঠ পর্যায়ের বই সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে ত্রুটি পেলে তাদেরকে তালিকাভুক্ত করে এবং নিম্নমানের বইসহ এনসিটিবিতে জমা দেয়। পরে এনসিটিবি সেই প্রতিবেদনের আলোকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে শোকজ করে। আমার প্রতিষ্ঠান এনসিটিবির টেন্ডার স্পেসিফিকেশন-এর বাইরে কাজ করেনি এবং আমাকে কোন শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়নি। অথচ ইত্তেফাকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমার প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে। যা সর্বৈব মিথ্যা।

ব্রাইট প্রিন্টিং এর নামে প্রকাশিত সংবাদ সর্বৈব মিথ্যা দাবি প্রতিষ্ঠানের

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যবই সময়মতো না ছেপে সরকারকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছি। এটাও ডাহা মিথ্যা কথা। কোনো গোয়েন্দা বা কোনো গণমাধ্যমে এমন কোনো প্রতিবেদন আমার বিরুদ্ধে অদ্যাবধি প্রকাশিত হয়নি। বাস্তবে এই শিক্ষাবর্ষে আমার প্রতিষ্ঠানই একমাত্র, যে কিনা টেন্ডার পাওয়ার পর নিজস্ব নামে এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে উন্নত মানের অফসেট সাদা মুদ্রণ কাগজ আমদানি করে ১০০% পাল্প পেপার মিলের কাগজ দিয়ে সকল বই-ই নিজেদের প্রেসে ছাপা ও বাধাঁই করে এনসিটিবির কার্যাদেশের নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক জেলা/উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সরবরাহ করেছি।

ইত্তেফাকের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আমার ও আমার পরিবারের পাঁচটি ছাপাখানা রয়েছে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। প্রকৃত সত্য হলো আমি ও আমার পরিবারের মাত্র তিনটি ছাপাখানা ছিল। ইতিমধ্যে মালিহা প্রেসটি বন্ধ আছে। এখন মাত্র দুটো প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে যা- ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস লি: ও প্রমা প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স লি:।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের এক নেতার ভাগ্নে পরিচয় দেই এবং সাবেক দুই মন্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের কথা। গত ১৫ বছরে মোট পাঠ্যবই ছাপার বেশিরভাগ আমি পেয়েছি। আমি জাহাজ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছি ও অস্ট্রেলিয়ায় টাকা পাঠিয়েছি। এসব তথ্য পুরোটাই কাল্পনিক ও ডাহা মিথ্যা। বাস্তবে প্রতি শিক্ষাবর্ষে বই ছাপার যতো কাজ হয় তার শতকরা চারভাগের বেশি আমি পাইনি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমার বংশে রক্তের সম্পর্কে কেউ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী নেই। আমি কারো ভাগ্নে পরিচয় দেইনা।

এর কোনো প্রমাণ ইত্তেফাকের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক দিতে পারবেন না। আমার দুটো কার্গো ভেসেল ২০১২-২০১৩ অর্থ বছর থেকে। যা সরকারের ট্যাক্স ফাইলে দেখানো রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় টাকা পাঠানোর তথ্যটিও ভুয়া ও আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য মানহানিকর।

প্রতিবেদনে পাঞ্জেরী প্রিন্টার্সের মালিক রায়হানের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, মনোপলির কারণে বিগত বছরে কয়েকটি ছাপাখানা বন্ধ হওয়ার কথা। বাস্তবে প্রতি বছর ২০ থেকে ২৫টি নতুন প্রেস তৈরি হচ্ছে এবং প্রকৃত বিষয় হলো রায়হান পাঞ্জেরী প্রিন্টার্স এর মালিকের ছেলে এবং রায়হান এমন কোনো স্টেটমেন্ট দেননি। রায়হানের কাছে গত ১০/১২ দিন আগে ইত্তেফাকের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে একজন ফোন করে জানতে চেয়েছেন পাঠ্যবই মুদ্রণ করে এমন কোন কোন প্রেস কি কি কারণে বন্ধ হয়েছে। প্রতিবেদনে রায়হানের বরাতে যা প্রকাশিত হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা মর্মে জানিয়েছেন রায়হান। এ বিষয়ে ইত্তেফাকে আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানাবেন রায়হান।

সাংবাদিকতার নিয়ম অনুযায়ী আমার সঙ্গে কথা বলার কথা থাকলেও প্রতিবেদক তা করেননি। বরং ইচ্ছেমতো লিখে দিয়েছেন যে, আমাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। কাল্পনিক এই প্রতিবেদনে আমার ব্যবসায়ীক, পারিবারিক ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা কোনো কিছুর বিনিময়ে আর ফিরে পাওয়া যাবে না।

পরিশেষে, আমার প্রতিবাদ লিপিটি হুবহু আপনার পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপার বিশেষ অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনো কাল্পনিক প্রতিবেদন না ছাপা হয়, সেই বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি। কারণ, দৈনিক ইত্তেফাক আমাদের জাতির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। এখানে কোনো ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ হলে গোটা জাতির কাছে ভুল প্রতিবেদনের শিকার ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। যা কোনো কিছুর বিনিময়ে আর ফেরানো যাবে না।

নিবেদক

এস এম মহসিন

ব্যবস্থাপনা পরিচালক

ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস লি:

মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২

#পাঠ্যবই #কাগজ #শোকজ #ছাপাখানা