ধর্মপুর গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম মাদরাসা। ছবি : দৈনিক শিক্ষাডটকম
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ধর্মপুর গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম মাদরাসার সহকারী মৌলভী মমতাজ আরার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমতি না নিয়ে বিএড সনদ গ্রহণ করে, সেই সনদ দিয়ে বিএড স্কেল গ্রহণ করার অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে থাকা তার বিএড স্কেলপ্রাপ্তি ও অনুমতি রেজুলেশনে অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের অমিল রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার শিক্ষানুরাগীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সহকারী মৌলভী মমতাজ আরা ওই মাদরাসায় গত ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ নভেম্বর নিয়োগ নিয়ে পরের বছরের ১ মে থেকে এমপিওভুক্ত হন। এরপর তিনি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই জয়পুরহাট বিএড কলেজ থেকে বিএড সনদ সংগ্রহ করেন। পরে তিনি মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেনকে তার এই বিএড সনদ দিয়ে বিএড স্কেল দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি এই সনদ দিয়ে বিএড স্কেল দিতে অস্বীকার করলে মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করে। সবার অনুরোধের ভিত্তিতে অধ্যক্ষ তাকে বিএড স্কেল প্রাপ্তির রেজুলেশন করে দেন।
সে সময় শিক্ষক মমতাজ আরা সাদা কাগজে একটি অঙ্গীকারনামা লেখে দেন। তাতে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই জয়পুরহাট বিএড কলেজ থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে কোর্স করে সনদ সংগ্রহ করেন। এভাবে সনদ নেওয়াটা তার ভুল ছিল। এই সনদ দিয়ে বিএড স্কেল নেওয়া যদি অবৈধ হয় তার দায়ভার তিনি নিজেই বহন করবেন এবং সমুদয় অর্থ নিজে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিবেন। গত ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জানুয়ারি অঙ্গীকারনামা দিয়ে ওই মাস থেকেই তিনি বিএড স্কেল গ্রহণ করেন। এরপর ফাঁকা একটি রেজুলেশন বইয়ে শুধুমাত্র শিক্ষক মমতাজ আরার বিএড কোর্স করার অনুমতি রেজুলেশন করা হয়েছে। সেই রেজুলেশন বইয়ে অন্য কোন রেজুলেশন করা নেই।
জানতে চাইলে শিক্ষক মমতাজ আরা সত্যতা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে কোর্স করেছি এবং বিএড স্কেল নিয়েছি। এভাবে আমার বিএড স্কেল নেওয়া ঠিক হয়েছে কিনা তা জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছুটিতে থাকা অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মমতাজ আরা বিএড প্রশিক্ষণের জন্য মাদরাসা থেকে কোন ছুটি গ্রহণ করেনি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের পাশ করা বিএড প্রশিক্ষণের একটি সনদ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে এনে বিএড স্কেল প্রাপ্তির দাবি করে। সে উক্ত বছর মাদরাসায় উপস্থিত ছিল বলে তাকে বিএড স্কেল দিতে অস্বীকার করলে সে সব শিক্ষকগণকে আমার কাছে ডেকে এনে তাকে স্কেল দেওয়ার জোর অনুরোধ করে। আমি তাকে তার সনদ অর্জন বিষয়ে জানতে চাইলে সে ভুল স্বীকার করে এবং স্কেল গ্রহণ যদি সঠিক না হয় তাহলে গৃহীত সব টাকা সরকারি কোষাগারে এককভাবে ফেরত প্রদান করবে এবং এককভাবে সে নিজেই দায়ী থাকবে এতে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী থাকবে না বলে আমার নিকট অঙ্গীকারনামা প্রদান করে। তখন আমি তার বেতন প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এর পূর্বে কোন অনুমতিপত্র বা রেজুলেশন করে দেইনি।
মাদরাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেওয়ান আমানুল্লাহ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মমতাজ আরাকে বিএড স্কেল দেয়ার জন্য আমি ও অন্যান্য শিক্ষক অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম। এখন আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ফাঁকা একটি রেজুলেশন বইয়ে তার বিএড করার অনুমতি সংক্রান্ত শুধুমাত্র একটি রেজুলেশন দেখতে পাই। তার বিএড স্কেল নেওয়া বিধিসম্মত আছে কিনা সেটা আমি জানি না।
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গ্রহণ করা সনদ দিয়ে বিএড স্কেল নেয়ার কোনো বিধান নেই। তিনি যদি এইভাবে স্কেল নিয়ে থাকেন তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।