অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেছেন, একটি চরম উদাহরণ বিবেচনা করুন। ধরুন জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে বিশ্বমানের শিক্ষক-গবেষক এনে দেশে একটা ক্যামব্রিজ কিংবা হাভার্ড অথবা সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মানের একটা বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ফেললাম।
আর কিছু লাগে? এই এক বিশ্ববিদ্যালয়ই বাংলাদেশকে উন্নত বানিয়ে ফেলবে কারণ সেই মানের বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের মানুষ তৈরি করবে। আর বিশ্বমানের মানুষই পারে একটি দেশকে উন্নত করতে।
এখন আমাদের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কি করছে? সারাদিন ব্যস্ত রাজনীতি, কুটনামি, মারামারি ইত্যাদি নিয়ে। কোথায় লেখাপড়া? কোথায় গবেষণা?
বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক মামুন আরো বলেন, শুধু শিক্ষায় জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়িয়ে এবং একই সঙ্গে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করতে নিজ খরচে হাজার-হাজার শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার একটা অংশকে থামানো যেতো।
এতে প্রচুর ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চলে যাওয়া রোধ করা যেতো। শুধু তাই না যারা বিদেশে পড়তে যায় তাদের প্রায় সবাই বিদেশে থেকে যায়। দেশে লেখাপড়া করলে দেশের প্রতি টান জন্মাতো এবং এই মেধাবীরা দেশকে বাসযোগ্য বানাতে পারতো।
ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, ৫ আগস্টের পর ভেবেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জার্নাল প্রকাশ বন্ধ করে সহজে প্রমোশন পাওয়ার মেশিনটা বন্ধ করবে।
একই সঙ্গে প্রমোশন নীতিমালায় বলবে কেবল ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ০ দশমিক ৫ এর ওপরে আছে এমন জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেলই প্রমোশনের জন্য বিবেচিত হবে।
ভেবেছিলাম ৫০-এর অধিক রিসার্চ সেন্টারের ৪০টিকেই বন্ধ করে ১০টি করা এবং ৫০টিতে যে বাজেট বরাদ্দ দিত তা ১০টিকে দিয়ে সাথে আরো যোগ করে সত্যিকারের গবেষণা সেন্টার বানানো।
যেমন সেমিকন্ডাক্টর রিসার্চকে এখন জরুরি ভিত্তিতে বিশ্বমানের করা আমাদের জরুরি। এইখানে বিশ্বমানের গবেষকদের উন্নত সুবিধা দিয়ে নিয়োগ দিলে দেশে সেমিকন্ডাক্টর রিসার্চ বাড়ানো যায়।
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি থেকে বেশি জরুরি সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি। সেমিকন্ডাক্টর রিসার্চকে ব্যাকআপ দিতে দরকার একটা ফান্ডামেন্টাল সাইন্স রিসার্চ সেন্টার। এই ক্ষেত্রে বোস সেন্টারকে টার্গেট করে বিশ্বমানের করা জরুরি।
অধ্যাপক মামুন বলেন, আমি ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর ছাত্র-শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি বন্ধ হবে। এখন দেখি রাজনীতি আগের চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে।
এইভাবে চললেতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান দিন দিন আরো ডুববে। এই ভিসির কাছে অনেক প্রত্যাশা ছিলো। কিন্তু সেই প্রত্যাশা দিন-দিন ধুলোয় মিশে যাচ্ছে।
একই সঙ্গে আগামী বাংলাদেশের কথা ভেবেও আমি কোনো আলো দেখতে পাচ্ছি না। আমি শুধু অন্ধকারের হাতছানি দেখি।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।